২০১৭ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু (ধর্মীয় ও জাতিগত) ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর কমপক্ষে এক হাজার চারটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৬ সালে এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৭১টি।
অর্থাৎ ২০১৭ সালে সহিংসতার ঘটনা তুলনামূলকভাবে কমেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
সংগঠনটি বলছে, ২০১৬ সালে গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টেুরেন্টে হত্যাকাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’ ঘোষণায় গৃহীত পদক্ষেপের কারণেই ২০১৭ সালে এ ধরনের ঘটনা তুলনামূলকভাবে কমেছে। ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সহিংসতার ঘটনা কমেছে ৪৬৭টি।
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের নেতারা এসব তথ্য জানান। জাতীয় সংবাদপত্র, অনলাইন সংবাদমাধ্যম ও সংগঠনের নিজস্ব অনুসন্ধানের মাধ্যমে তৈরি করা ‘সংখ্যালঘু (ধর্মীয় ও জাতিগত) ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার প্রতিবেদন-২০১৭’ উপস্থাপন উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আয়োজক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে অধিকাংশ সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার সংখ্যা আনুমানিক ৩০ হাজার। প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও বেশি। বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ৮২ জন। একই সময়ে আরও ২২টি রহস্যজনক মৃত্যু ও মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে, যা হত্যাকাণ্ড বলে প্রতীয়মান হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সহিংস হামলা ও শারীরিক নির্যাতনে আহত ও জখম হয়েছেন ১৮ জন, ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ৪৪টি, এদের মধ্যে চারজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। জমিজমা, ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৪৭১টি। ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি (শশ্মান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ) দখলের ঘটনা ঘটেছে ১১৪টি। দখল ও উচ্ছেদের তৎপরতা ১২০টি। প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে কমপক্ষে ২২টি।