চাঁদা না দেওয়ায় ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজার উপস্থিতিতে এক হিন্দুবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুরসহ লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তাদের থানায় না যেতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে পরিবারটি। জেলার গৌরীপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের সুনীল রবিদাসের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক মোর্শেদুজ্জামান সেলিমের ভাতিজা অপু ও ভাগ্নে তুহিনের উপস্থিতিতে রবিবার মধ্যরাতে এই হামলা চালানো হয়।
চাঁদা না দেওয়ায় এই হামলা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে একই গ্রামের ফজর আলীর ছেলে জুয়েল (২৬), আহাম্মদ আলীর ছেলে রুবেল (২৪), কাদির মিয়ার ছেলে বিল্লাল (২৩) তার কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা করেন।
“চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মধ্যরাতে ৮-১০ জন যুবক বাড়িতে ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট করে। তারা ঘরের আসবাবপত্রও নিয়ে যায়। ভাংচুর ও লুটপাটের সময় সেলিমের ভাতিজা অপু ও ভাগ্নে তুহিন উপস্থিত ছিলেন।”
মধ্যরাতে সবাই ঘুমিয়ে থাকার সময় হঠাৎ এই হামলা হয় বলে তিনি জানান। সুনীলের স্ত্রী রিনা রানী বলেন, “হঠাৎ ভাংচুরের আওয়াজ শুনে ঘুম ভাঙ্গে। জেগে দেখি কয়েকজন যুবক দেশি অস্ত্রশত্র নিয়ে এসে আমার নিমার্ণাধীন ঘর ভাংচুর করছে। আমি তাদের হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি করলেও আমার কথা শোনেনি। পরে ঘর ভেঙ্গে মালামাল সাথে করে নিয়ে যায়।
“আমার ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ঘর ভাঙচুরের আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে ভয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। ছেলেমেয়ে নিয়ে আশংকায় আছি কখন যেন আবার হামলা হয়।”
এখন ভয়ে থানায়ও যেতে পারছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা হুমকি দিচ্ছে থানায় গেলে আরও ক্ষতি করবে।” তবে অপু ও তুহিন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন মোর্শেদুজ্জামাম সেলিম।
তিনি বলেন, “ঘটনার সঙ্গে আমার ভাতিজা অপু ও ভাগ্নে তুহিন কোনোভাবেই জড়িত নয়। ঘটনাটি ঘটিয়েছে জুয়েল, রুবেল, বিল্লালসহ কয়েকজন। তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”
হিন্দুদের ওপর হামলার ‘বিচার না হওয়ায়’ এসব ঘটনা দিন দিন বেড়ে চলছে বলে মনে করেন ময়লাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াদুজ্জামান রিয়াদ।
তিনি বলেন, “রবিদাস সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও স্থানীয় সন্ত্রাসীরা এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।” ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সামসুল আলম বলেন, “জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি রবিদাস সম্প্রদায়ের ওরা এখানে বসবাস করছে।
“দুর্বৃত্তরা কোন অধিকারে তাদের ঘর ভাংচুর করেছে সেটা আমার জানা নাই। তবে আমি ওই সন্ত্রাসীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি, যেন ভবিষ্যতে কেউ আর এমন কাজ করতে না পারে।”
এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার ওসি দেলোয়ার আহম্মেদ বলেন, “হামলার ঘটনা শুনেছি। কিন্তু কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দায়ের করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে