গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২০৮-তম জন্ম তিথি উপলক্ষ্যে আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ স্নানোৎসব ও তিন দিনব্যাপী মহাবারুনীর মেলা।
হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্ম ও মৃত্যু তিথীতে আয়োজন করা হয় এ স্নানোৎবের। মতুয়া ভক্তরা পুণ্যের আশায় শনিবার বিকাল তিনটা থেকে শুরু করে রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঠাকুরবাড়ীর দুটি দীঘিতে তাদের পুণ্যস্নান শেষ করবেন।
স্নানোৎসব চলাকালে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্নানোৎসব ও মেলা উদযাপন কমিটি। ঠাকুর বাড়ি এলাকায় উচ্চ পর্যবেক্ষণ চৌকি ও সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের পাশাপাশি মতুয়া সংঘের ৩ শাতাধিক স্বেচ্ছাসেবক সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন।
গোপালগঞ্জ জেলাশহর থেকে প্রায় ২৭ কি.মি. উত্তর-পূর্বে অবস্থিত শ্রীধাম ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ী। বুধবার বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে হরিচাঁদ ঠাকুরের উত্তরসূরী শচিপতি ঠাকুর ও হেমাংশুপতি ঠাকুর সুব্রত ঠাকুর এ স্নানোৎসবের উদ্বোধন করবেন। এসময় পদ্মনাভ ঠাকুর, অমিতাভ ঠাকুর, হেমাংশু ঠাকুর, শচীপতি ঠাকুর ও সুব্রত ঠাকুরসহ পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত থাকবেনএবং লক্ষীখালির সাগর ঠাকুরও উপস্থিত থাকবেন। পরে ধর্মীয়রীতি অনুযায়ী ওড়াকান্দির হরি মন্দির ও গুরু চাঁদ মন্দিরে পূজা-অর্চনা শুরু করবেন পুরোহিতরা। বিরামহীনভাবে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত চলতে থাকবে পুন্যার্থীদের স্নান উৎসব।
২শ ৮ বছর আগে ১২১৮ সালের ফাল্গুন মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথীতে ব্রহ্মমুহূর্তে মহাবারুণীর দিনে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার সাফলীডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন পূর্ণব্রহ্মা হরিচাঁদ ঠাকুর। পিতা যশোবন্ত ঠাকুরের পাঁচ পুত্রের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। বাল্যনাম হরি হলেও ভক্তরা হরিচাঁদ নামেই তাকে ডাকতেন। ছোটবেলা থেকেই তার অলৌকিকত্ব ও লীলার জন্য বিখ্যাত হয়ে ওঠে পার্শ্ববর্তী গ্রাম ওড়াকান্দি। ক্রমেই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে শ্রীধাম ওড়াকান্দির নাম এবং সারা দেশের হিন্দু-সম্প্রদায়ের কাছে এটি পরিণত হয় তীর্থস্থানে। ৬৬ বছর বয়সে ১২৮৪ বঙ্গাব্দে জন্ম দিবসের একই তিথিতেই তিনি পরলোক গমন করেন।