আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি নয়াদিল্লির আরেক মিত্র ভুটানও সফর করবেন। এ দুটি দেশই এ বছর জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ সময়ে ঢাকা ও থিম্পুর প্রতি ভারত সরকারের সমর্থন প্রদর্শনের উদ্দেশ্যেই মোদির সফরের এ পরিকল্পনা।
মোদীর সফরের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে তিনি যে সফরে যাচ্ছেন, এটা চূড়ান্ত। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত সূত্রগুলো ভারতের দি ইকোনমিক টাইমসকে এ কথা জানিয়েছে। এই প্রতিবেদনের ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমারের মন্তব্য চাইলে তিনি বলেন, ‘সফরসূচি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের পক্ষে ঘোষণা করা সম্ভব নয়।’
শনিবার পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনী বছরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য দিল্লির সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির প্রতীক্ষায় রয়েছে ঢাকা। অন্যদিকে, হিমালয়ের পাদদেশের দেশ ভুটানে চীনের উপস্থিতি বাড়ছে। তাই বছরের প্রথমার্ধে ওই সফরে যাওয়ার কথা নরেন্দ্র মোদির।
ইকোনমিক টাইমস লিখেছে, পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে এখন ভারতে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সেখানে ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্স সামিটে অংশ নেওয়ার কথা তার। এ সময় মোদী আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের পরিকল্পনাকে দেখা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে। কারণ, প্রত্যাশা রয়েছে- তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে মোদি কোনো ‘মেকানিজম’ প্রস্তাব করতে পারেন। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিটি বাংলাদেশের জন্য একটি আবেগময় বিষয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে সম্মতি দেননি।
২০১৫ সালে মোদী ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে বিভিন্ন উপলক্ষে তিনবার দিল্লি সফর করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন ইস্যুতে ‘বুদ্ধিমত্তা’র সঙ্গে কাজ করছে শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চীনা কোম্পানি। অন্যদিকে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (বিআরআই) দুই হাজার ৩০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে চীন। তবে আওয়ামী লীগ সরকার তা এখনও গ্রহণ করেনি। এর কারণ, ভারতের উদ্বেগের বিষয়টি ঢাকার কাছে স্পর্শকাতর।
ভুটানে ভারত সমর্থিত একটি নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিকল্পনাধীন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে ২০১৪ সালে ভুটান গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সাম্প্রতিক দোকলাম ঘটনার মধ্য দিয়ে ভুটানে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে চীন। তারা থিম্পুতে তাদের পা রাখার পরিকল্পনা করেছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচটি দেশের কারও সঙ্গেই কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই ভুটানের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছরের শেষ দিকে ভুটানে হবে তৃতীয় জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচন ভারত ও চীনের জন্য সম্পর্কের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। বিরল এক ঘটনায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র সচিব ও সেনাপ্রধান সম্প্রতি থিম্পু সফর করেছেন।
ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বা ভুটানের পাশাপাশি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যুক্ত হবেন নেপালের সঙ্গেও। সম্প্রতি উত্তেজনাকর পরিস্থিতির পর প্রথমবারের মতো দিল্লি সফরে আসতে পারেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলি। চতুর্থ রাউন্ড বিমসটেকের সম্মেলনে এ বছর কাঠমান্ডু যেতে পারেন নরেন্দ্র মোদী।
Ahmedabad: Prime Minister Narendra Modi addresses an election campaign rally, at Dhandhuka village of Ahmedabad district on Wednesday. PTI Photo (PTI12_6_2017_000048B)