সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পাইলগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইলগাঁও গ্রামের আশিঘর পাড়ায় সংখ্যালঘু পরিবারে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা ৩০ মিনিটের সময় ছোট বাচ্চাদের ঝগড়ার জের ধরে ঘর ভাংচুর ও লুটপাট এবং ৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকালে খেলার মাঠে আশিঘর পাড়ার মাসুক আলীর ছেলে মুহিবুর রহমান (১৮) একই পাড়ার পরিমল দাসের ছেলে নিতাই দাশ (১০)কে তুচ্ছ ঘটনায় লাথি মারলে মন্তদাসের ছেলে অসীম দাশ (১৬) এর প্রতিবাদ করলে তার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনা পর স্থানীয় মেম্বার আবু বকর মধু মিয়াসহ গ্রামের মুরুব্বিগন বিষয়টি শালিস মীমাংসায় শেষ করার চেষ্টা করেন।
কিন্তু মাসুক আলী কর্ণপাত না করে রাত ১০ টা ৩০ মিনিটের সময় মন্ত দাশের বাড়িতে আক্রমন করে ভাংচুর ও লুটপাট করে। এতে মন্ত দাশের স্ত্রী শ্রীমতি রানী দাশসহ তার ছেলে অসিম দাশ বাধা দিলে মাসুক আলী ও তার লোকদের আঘাতে আহত হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স এ নিয়ে যায়। অসিম দাশকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং শ্রীমতি রানী দাশকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে মন্ত দাশের ছেলে অসিম দাস বলেন, নিতাই দাস কে মুহিবুর অযথা মারপিট করলে এতে আমি বাধা দিলে আমার সাথে তার মারামারি হয়। এর প্রেক্ষিতে রাতে মুহিবুর তার বাবা মাসুক আলী, তার চাচা খুর্শেদ আলী ও সেবুল মিয়া সহ ৮-৯ জন আমাদের ঘরে হামলা করে। আমাদের ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে আসবাবপত্র সহ সব কিছু ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়।আমাদের ঘরে সমিতির জমাকৃত টাকা ও আমার মায়ের ব্যবহারকৃত স্বর্ণ তারা লুটপাট করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় সুধির চন্দ্র দাশের ছেলে অধির চন্দ্র দাশ জানান, মন্ত দাশ আমাদের সমিতির ক্যাশিয়ার, তার কাছে সমিতির জমাকৃত প্রায় দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা ছিল। যা তারা লুটপাট করে নিয়ে গেছে, এমনকি তার স্ত্রীর কিছু স্বর্ণ অলংকার ছিল। তাও তারা লুটপাট করে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু বকর মধু মিয়া জানান, আমরা দুই পক্ষের ছোট বাচ্চাদের মারামারির খবর পেয়ে গ্রামের মুরুব্বিদের নিয়ে বিষয়টি শেষ করার চেষ্টা করি। কিন্তু মাসুক আলীর পক্ষ না মানায় শেষ করতে পারি নাই। পরবর্তিতে হামলার ঘটনা শুনার পর মন্ত দাশের বাড়ি পরির্দশন করি ভাংচুর দেখতে পাই এবং লুটপাটের ঘটনা শুনেছি। সংখ্যালঘু পরিবারে এধরনের হামলার ঘটনায় গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ ব্যাপারে জানতে মাসুক আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নাই।
এ ব্যাপারে জানতে জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশিদ চৌধুরী সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পাইলগাঁও ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ব্যাপারে আমাদের কাছে মৌখিক খবর আসছে। আমরা হাসপাতালে গিয়ে রোগী দেখেছি। এখনো পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ আসে নাই। আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।