লোপা রায় বিশ্বাস,এর পোস্টথেকে নেওয়া
আমি লোপা রায় বিশ্বাস, খুব বিপদে পড়েই এই পোস্টটি আপনাদের উদ্দেশে লেখা।
আমার মা একটা NGO (ডে-নাইট পরিবেশন উন্নয়ন ফাউন্ডেশন)তে মাঠকর্মী হিসেবে ২০১০ সাল থেকে কাজ করতেন। এই NGO এর ম্যানেজিং ডিরেক্টরের নাম মুজিবর রহমান এবং চেয়ারম্যানের নাম মনিরুজ্জামান। আমাদের বাড়ি খুলনা জেলার দাকোপ থানার খোটাখালি বাজারে।
সম্প্রতি এই NGO এর মালিকেরা সবার সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হয়ে যায়। এমতাবস্থায় গত ১৩ এপ্রিল শুক্রবার আমাদের এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী কিছু লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়ি ঘেড়াও করে, আমার বাবা-মা কে চাপ দিয়ে ভয় দেখিয়ে জোর করে প্রতিটি ১০০ টাকা মূল্যের ৬ টি অলিখিত নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প যাহার ৩ টি তে আমার বাবার স্বাক্ষর এবং ৩ টি তে আমার মায়ের স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এছাড়া রুপালী ব্যাংক লিঃ এর ৭ টি সাদা চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয় এবং বাবা-মায়ের পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়াও যাওয়ার সময় আমাদের হুমকী দিয়ে যায় যে ১ মাসের মধ্যে বাড়ি বিক্রি করে তাদের টাকা দিতে হবে।
আমরা স্থানীয় ভাবে চেষ্টা করেও কারো মাধ্যমেই কোনো সহযোগীতা পাইনি এগুলো ফেরত পাবার। ফেরত পেতে ব্যর্থ হয়ে আদালতে আমরা মামলা করি। এর ফলে আরো রুষ্ট হয়ে লোকজন নিয়ে গত ২০ এপ্রিল আমাদের বাড়িতে হামলা করে বাড়িতে তালা লাগিয়ে দেয় আর আমাদের ভাড়াটিয়াদের হুমকী দিয়ে যায় যেন ভাড়ার টাকা স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের হাতে দিতে হবে। না হয় ৫ দিনের মধ্যে বাসা ছেড়ে দিতে হবে।
ঐ মূহুর্তে কারো কোনো সহযোগীতা না পেয়ে আমি ৯৯৯ এ কল দিয়ে বিস্তারিত জানাই তারা সেই কলটি আমাদের দাকোপ থানার ওসি স্যারকে ট্রান্সফার করে। তারপর তাকেও আমি সব বুঝিয়ে বলি। স্যারকে অশেষ ধন্যবাদ যে তিনি তার লোক পাঠিয়ে আমাদের তালা খোলার ব্যবস্থা করে।
আরও একটা বিষয় হচ্ছে, এসব ঝামেলাতে আমার বাবা এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়ে যে তাকে খুলনা মেডিক্যালে ১৭ই এপ্রিল ভর্তি করতে হয়। কিন্তু এলাকায় রটানো হয় যে আমার বাবা পলাতক।
তারপর ঐ স্থানীয় লোকজন অন্যদের উস্কিয়ে উপজিলা চেয়ারম্যান এবং UNO স্যারের কাছে যায় এবং তাদের সামনে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয় যে টাকাটা আমরা আত্মসাৎ করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় কেউই NGO এর মালিককে ধরার চেষ্টা করছেন না। তাদের বিরুদ্ধে কোন কমপ্লেইন ও করছেন না। যত কমপ্লেইন মাঠকর্মীদের উপর। আর মাঠকর্মীরা যদি এর সাথে জড়িত থাকতই তাহলে তারাও তো পালিয়ে লাপাত্তা হয়ে যেত। আর তারা গত ৭-৮ বছর ধরে এই NGO তে চাকরী করছে, NGO এর মালিকেরা যে টাকা নিয়ে চলে যাবে তারা তো আর জানত না।
এতগুলো টাকা তাদের দেয়া কি সম্ভব? আর হ্যাঁ, এও সত্য যে এই টাকাগুলো অনেক হতদরিদ্রদের কষ্টের টাকা। কিন্তু এই কর্মীদের কি করার আছে যে স্থানীয় প্রভাবশালী আমাদের এভাবে হেনস্তা করছে। আমাদের জীবন নাশের হুমকী দিচ্ছে। এখন আমার বাবার চাকরি চলে যাবার হুমকী দিচ্ছে। আমার বাবার অফিস থেকে চাকরীচ্যুত করার হুমকি দেয়া হয়েছে যেহেতু স্থানীয় লোকজন গিয়ে কমপ্লেইন করে এসেছে। আমরা কারোর কাছ থেকে কোন সহযোগীতা পাচ্ছি না।
এই মূহুর্তে আমি আমার পরিবার খুবই অসহায় অবস্থায় আছি। আমাদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। আমার বাবার চাকরীর নিরাপত্তা নেই। প্রকৃত দোষীকে শাস্তি না দিয়ে আমাদের মত একটা পরিবারকে পথে বসিয়ে কার এবং কাদের উপকার হচ্ছে জানিনা।
কারো কাছে কোন প্রকার সহযোগীতা পাচ্ছিনা। আপনারা কেউ যদি আমাকে কোন উপকার করতে পারেন জানাবেন।
কি বিপদ পার করছি একমাত্র আমরাই জানি। আশা করছি আপনাদের কাছ থেকে কোন না কোন সুরাহা পাব।।