নওগাঁর মান্দায় আরতী রানী নামে এক শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। গত দুদিন ধরে বিদ্যালয়ে আসলেও শিক্ষকদের কোনো ক্লাসে অংশ নিচ্ছে না তারা। উপজেলার বিলবয়রা গয়েশীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এ ঘটনায় অভিভাবক মহলে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা (কাব্যতীর্থ) আরতী রানীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে অশালীন আচরন করে আসছিলেন প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান। বিভিন্ন অজুহাতে ওই শিক্ষিকার ওপর প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ করছিলেন তিনি। গত ১৮ মার্চ শিক্ষিকা আরতী রানী অসুস্থ হয়ে পড়লে মোবাইলফোনে প্রধান শিক্ষকের নিকট ছুটির আবেদন করেন। ছুটি মঞ্জুর না করে শিক্ষিকা আরতী রানীকে যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান।
শিক্ষিকা আরতী রানী জানান, অসুস্থ অবস্থায় ওইদিন বেলা ১১টার দিকে তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। এদিন তাকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর কিংবা ক্লাসে যেতে দেয়া হয়নি। এনিয়ে প্রধান শিক্ষক তার কক্ষে অন্য শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে তাকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান। এসবের প্রতিবাদ করায় প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার চরম বাকবিতন্ডা হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনার জের ধরে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান গত ১৯ মার্চ ও ২১ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন। নোটিশ দুটির যথাযথ জবাবও দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় গত ৯ মে চাকরি থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বর্তমানে চাকরি নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষিকা আরতী রানী।
এদিকে শিক্ষিকা আরতী রানীকে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন শুরু করেছে। শনি ও রবিবার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলেও শিক্ষকদের কোনো ক্লাসে অংশ নেয়নি তারা। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শফিকুর রহমান, ফিরোজ হোসেন, মাসুদ রানা, হাবিবুর রহমানসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষিকা আরতী রানী ক্লাসে গাফলতি করেন না। সময়মত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধান শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদেরও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি মানেন না শিক্ষিকা আরতী রানী। ছুটি ছাড়াই যখন তখন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন। খেয়াল খুশিমত বিদ্যালয়ে আগমন ও প্রস্থান করে থাকেন। এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির অনুমতিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বিষয়টি অবহিত রয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে।