পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির গণকপাড়ায় বাজার পরিচ্ছন্নকর্মী এক হিন্দু নারী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত শুক্রবার গভীর রাতে এ ঘটনা বলে জানা যায়। তবে ঘটনার তিন পার হয়ে গেলেও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলা হয়নি।
মামলা করতে বাধা এমনকি জীবন নাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বেল্লাল ও জেলে সুমনের বিরুদ্ধে ।
এলাকাসূত্রে জানা যায়, গণকপাড়া বাজার সংলগ্ন গুচ্ছ গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা নারী পরিচ্ছন্নকর্মীকে শুক্রবার (৮/৬/১৮) রাত আড়াইটায় একই এলাকার মোটরসাইকেল চালক বেল্লাল ও জেলে সুমন তার মুখ, হাত বেধেঁ ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের সহায়তায় শনিবার (৯/৬/১৮) নেছারাবাদ থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন ধর্ষিতা। তবে স্থানীয় কারো হুমকির মুখে ধর্ষণ ঘটনার অভিযোগ নিলেও মামলা নেয়নি নেছারাবাদ থানা পুলিশ। উল্টো বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করার জন্য নেতাদের দায়িত্ব দেন নেছারাবাদ থানা পুলিশ।
এ ব্যপারে নেছারাবাদ থানা অফিসার ইনচার্জ কে এম তারিকুল ইমলাম বলেন, থানা পুলিশের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সত্য নয়। অভিযোগকারী মামলা দিতে রাজি না হওয়ায় মামলা হয় নি। অভিযোগকারীকে ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।
কিন্তু এ বিষয়ে সত্যতা যাচাই করতে স্বরূপকাঠি প্রেসক্লাবের সংবাদকর্মীরা সরেজমিনে গণকপাড়ার গুচ্ছ গ্রামে গেলে স্থানীয়রা এ ধর্ষণের কথা জানান।
ধর্ষিতা অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। এসময় চিৎকার করতে গেলে মুখে কাপড় গুজে ও দুই হাত চেপে ধরে। প্রথমে বেল্লাল পরে সুমন ধর্ষণ করে। এক পর্যায় তারা আমাকে ছেড়ে দিলে আমি চিৎকার করে পাশের বাড়ির উর্মিলাদের ঘরের সামনে গিয়ে পড়ে যাই। সুমন ও বেল্লাল তখন দৌড়ে পালিয়ে যায়।
প্রথমে স্থানীয় ইউপি সদস্য টবির কাছে জানালে তিনি চেয়ারম্যান প্রগতী মন্ডল কাছে পাঠায়। পরে চৌকিদার দিয়ে থানায় পাঠালে আমি ওসির কাছে ঘটনা খুলে বলি। কিন্তু ঘটনার তিন দিন পার হলেও কোন বিচার পাইনি বরং একের পর এক হুমকি দিচ্ছে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী উর্মিলা বলেন, শুক্রবার রাতে অর্ধনগ্ন অবস্থায় আমার ঘরের সামনে এসে পরে। এসময় সুমন ও বেল্লালকে দৌড়ে যেতে দেখি। তখন সে আমাকে সব ঘটনা জানায়। আমি তাকে ইউপি সদস্যকে জানাতে বলি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ কিশোর মন্ডল জানায়, আমি খবর শুনে ধর্ষিতা থানায় যাই, ওসি স্যারকে সব খু লে বললে ওসি স্যার পুলিশ পাঠায় আসামী ধরতে কিন্তু তখন আসামীরা পালিয়ে যায়।
নেছারাবাদের সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কাজী শাহ্ নেওয়াজ বলেন, অভিযোগকারী কোন অভিযোগ না করায় মামলা নেওয়া হয়নি। অভিযোগকারী অভিযোগ করলে আমরা মামলা নেব।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান প্রগতী মন্ডল মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন আমি চৌকিদার এবং মেম্বার দিয়ে থানায় পাঠাই আইনের কাজ প্রশাসন করবে । পরে এ ব্যপারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারা যায় মোটরসাইকেল চালক বেল্লাল ও জেলে সুমন এলাকাতেই আছে ।