পাঁচ বছর আগে ঢাকায় একুশের বইমেলা থেকে ফেরার পথে জঙ্গি হামলায় নিহত বিজ্ঞানমনা লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে স্মরণ করেছে নিউইয়র্কের মুক্তমনা ও মুক্তচিন্তার প্রবাসী বাংলাদেশিরা। স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় মোমবাতি জ্বালিয়ে এই লেখকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা অভিজিৎ হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে ধ্বংস, অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে হত্যা, মুক্তবুদ্ধির দেশকে নিশ্চিহ্ন ও প্রগতির চাকাকে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্যই হত্যার হোলি খেলেছে ঘাতকেরা। এসব হত্যাকাণ্ডের স্বরূপ উন্মোচন করতে সরকার যেমন ব্যর্থ হয়েছে, তেমনি ঘাতকেরা উৎসাহ পেয়েছে।
তারা আরও বলেন, পাঁচ বছর হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অভিজিৎ রায় হত্যার বিচার হয়নি। তার বাবা অজয় রায় ছেলের হত্যার বিচার দেখে যেতে পারেননি। আমরা জানি না যে, কত দিন তার বিচারের দাবিতে আমাদের এভাবে দাঁড়াতে হবে। অবিলম্বে অভিজিৎ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং বাংলাদেশে সকল প্রকার সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
সংস্কৃতিকর্মী গোপাল স্যানালের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান, সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ, নারী নেত্রী অধ্যাপিকা হুসনে আরা বেগম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার সভাপতি মিথুন আহমেদ, সংস্কৃতিকর্মী ও অ্যাক্টিভিস্ট আল-আমিন বাবু, সাংবাদিক মুজাহিদ আনসারী, হাসানুজ্জামান সাকী, যুক্তরাষ্ট্র জাসদের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম জিকু প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সনজীবন কুমার, কানু দত্ত, শাহ জে. চৌধুরী, তোফাজ্জল লিটনসহ মুক্তচিন্তার প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ব্লগার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে সাম্প্রদাযিক জঙ্গিগোষ্ঠী। এদিন রাতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তিনি খুন হন। বইমেলাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতির মধ্যেই এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে অভিজিতের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অজয় রায় শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গত বছরের ১ আগস্ট ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। তাদের মধ্যে দুজন পলাতক।