বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর-মুণ্ডপাশা গ্রামে অবস্থিত বিখ্যাত সুগন্ধা নাসিকা-শক্তিপীঠ (তাঁরাবাড়ি) পরিদর্শনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে – ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির। এ উপলক্ষে ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটির নেতৃত্বে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল, গত শুক্রবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী তীর্থস্থান ‘তাঁরাবাড়ি’ পরিদর্শন করেছেন।
বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত মহাকবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর-এর ‘অন্নদামঙ্গল’ মহাকাব্যে, ‘সুগন্ধা নাসিকা শক্তিপীঠ’-এর উল্লেখ আছে ―
“সুগন্ধায় নাসিকা পড়িল চক্রহতা।
ত্র্যম্বক ভৈরব তাহে সুনন্দা দেবতা।।”
শিকারপুর-মুণ্ডপাশা গ্রামে পঞ্চানন চক্রবর্তী নামে একজন নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ বসবাস করতেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সৎ, ধার্মিক ও মানব প্রেমিক ব্যক্তি। কিংবদন্তী অনুযায়ী ― একদা দেবী তাকে স্বপ্নে দর্শন দিয়ে বললেন, “সুগন্ধার গর্ভে আমি শিলারূপে বিরাজিতা আছি। তুই আমাকে সেখান থেকে তুলে এনে পূজোর ব্যবস্থা কর।”
পঞ্চানন চক্রবর্তী দেবীর স্বপ্নাদেশে প্রদর্শিত জায়গা থেকে, পাষাণ-মূর্তি তুলে এনে নিজ বাড়িতে উগ্র-তাঁরার মন্দির প্রতিষ্ঠা করে, নিত্য পূজা করতে থাকেন। পঞ্চানন চক্রবর্তীর পরিবার নিজেদের বসতভিটার একাংশ সহ বিশাল ভূসম্পত্তি শক্তিপীঠের জন্য দান করে দিয়েছে। কিন্তু তাঁরা-মন্দিরের বিশাল জায়গা বেদখল হয়ে গেছে; সেখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান।
১৯৭১ সালে কষ্টিপাথরের অমূল্য উগ্রতাঁরা-বিগ্রহ, রাজাকাররা লুট করে নিয়ে যায়। মহামূল্যবান সেই দেবী-বিগ্রহ আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অতিসম্প্রতি রাতের অন্ধকারে উগ্রতাঁরা-প্রতিমার ৩০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়ে গেছে। স্থানীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে আমি যতদূর জানতে পেরেছি ― সেই স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা তো দূরের কথা, সন্দেহ বশত আটক করে নির্যাতন চালানো হয়েছে – মন্দির সংলগ্ন একটি সনাতন ধর্মালম্বী পরিবারের কয়েকজন পুরুষ সদস্যকে।