সিলেট শহরে প্রাচীন একটি শৈব ভাস্কর্যের সন্ধান পাওয়া গেছে। পঞ্চমুখলিঙ্গ নামক ভাস্কর্যটির গৌরীপট্টের নলের সম্মুখভাগে রয়েছে বৃষভ মুখ। গবেষকদের মতে, বৃষভ মুখযুক্ত পঞ্চমুখলিঙ্গ ভাস্কর্যের সন্ধান ইতোপূর্বে পাওয়া যায়নি। গবেষকদের ধারণা, ব্ল্যাক ব্যাসল্ট পাথরে নির্মিত পঞ্চমুখলিঙ্গ ভাস্কর্যটি প্রাচীনকালে সিলেট অঞ্চলের কোনো শৈব বিহারের কেন্দ্রীয় মন্দিরে প্রধান বিগ্রহরূপে পূজিত হতো।
বর্তমানে এটি সিলেট শহরের সুরমা নদীর উত্তর তীরবর্তী কালীঘাট মহল্লার কালী মন্দিরে পূজিত হচ্ছে। মন্দিরটি স্থানীয়ভাবে কালী বাড়ি নামেও পরিচিত। শহরের ঐতিহ্যবাহী কালীঘাট মহল্লার কালী মন্দিরে আরও একটি বিরল প্রাচীন দেবী মূর্তি পূজিত হচ্ছে। মেটালের তৈরি মিনিয়েচার এই ভাস্কর্যটিতে চতুর্ভুজা দেবী শবের উপর পদ্মাসনে উপবিষ্ট। মূর্তিতত্ত্ববিদদের মতে, মূর্তিটি তান্ত্রিক ঐতিহ্যের। গবেষকদের ধারণা, বৃষভমুখসহ পঞ্চমুখলিঙ্গ এবং শবারূঢ়া দেবী ভাস্কর্য খ্রিষ্টিয় দশম-একাদশ শতকের শিল্পরীতির নিদর্শন।
শবে উপবিষ্ট দেবী। ছবি: তরুণ সরকার
গত আগস্ট মাসে সিলেট শহরে বিভিন্ন মন্দির আখড়ায় প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে বৃষভমুখসহ পঞ্চমুখলিঙ্গ এবং শবারূঢ়া দেবী ভাস্কর্যের সন্ধান পাওয়া যায়। এছাড়াও প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে শহরের কালীঘাট মহল্লার শিববাড়ি, শিববাড়ি মহল্লার বুড়ো শিব মন্দির ও মিরাবাজার মহল্লার বলরাম আখড়ায় আরও ৮টি প্রাচীন শিবলিঙ্গের সন্ধান পাওয়া যায়।
সিলেট শহরে নতুন সন্ধান পাওয়া ভাস্কর্যগুলো মূলত শৈব ঐতিহ্যের। প্রকাশিত কোনো গ্রন্থে বা প্রবন্ধে নতুন সন্ধান পাওয়া ১০টি ভাস্কর্যের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না। সিলেট শহরে নতুন সন্ধানপ্রাপ্ত ভাস্কর্যগুলো নিয়ে দেশের মূর্তিতত্ত্ববিদ, শিল্প ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতত্ত্ববিদদের সঙ্গে কথা হয়। তাদের মতে, শৈব ঐতিহ্যের উল্লিখিত ভাস্কর্য সন্ধান লাভের ঘটনা সিলেটের প্রাচীন ইতিহাস পূনর্গঠনে সহায়তা করবে।
কালী বাড়ির অবস্থান সিলেট নগরীর দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে। সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে কালীঘাট মহল্লায় আমজাদ আলী সড়কে, সিলেট সার্কিট হাউজ থেকে ৪২১ মিটার পূর্ব দিকে। স্থানীয়দের মতে, কালী বাড়ি থেকে সুরমা নদী তীরবর্তী মহল্লাটির নাম কালীঘাট হয়েছে। অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধির ‘শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত’ বইয়ে কালীঘাটের কালী মন্দিরটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়, লংলা নিবাসী কালীচরণ ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে ১৮০০ সালে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা