মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের হাজিপাড়া-মৌচাক-কাকরাইল ও রাজারবাগ অংশ উদ্বোধনের মাধ্যমে পুরো ফ্লাইওভারটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে কাল (বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর)। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন উপলক্ষে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রকল্প পরিচালক, প্রকৌশলী সুশান্ত কুমার পাল বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।উল্লেখ্য, ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ করা হয়েছে তিন ভাগে। প্রথম অংশ সাতরাস্তা-মগবাজার-হলি ফ্যামিলি পর্যন্ত। এই অংশটি ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করেন। এই ফ্লাইওভারটি দ্বিতীয় অংশ হলো, বাংলামোটর-মগবাজার-মৌচাক পর্যন্ত। এই অংশটি যান চলাচলের জন্য গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ফ্লাইওভারটির তৃতীয় অংশ হলো— শান্তিনগর-মালিবাগ-কাকরাইল ও রাজারবাগ অংশ। এই অংশ বর্তমানে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত।মঙ্গলবার বিকালে সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। উদ্বোধন উপলক্ষে এরইমধ্যে নিচের সড়কের সংস্কার করা হয়েছে। তবে ফ্লাইওভারের সৌন্দর্য বাড়াতে রঙিন কাপড় দিয়ে সাজানো হয়েছে। এছাড়া রঙ-কালি লাগানোসহ টুকিটাকি কাজ করছেন শ্রমিকরা।
জানতে চাইলে ফ্লাইওভারের সাজানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সব কাজ প্রায় শেষ। অল্প কিছু কাজ বাকি আছে, সেগুলো রাতের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।’
দীর্ঘ দিন দুর্ভোগের তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জনের পর উদ্বোধনের খবরে ফ্লাইওভারটির আশপাশের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে। জানতে চাইলে হাজীপাড়া এলাকার একজন বাড়ির মালিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত চার বছরে এই সড়কটিতে কী পরিমাণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, তা বলার মতো নয়। যেমন হাঁটু পানি, তেমনি কাদামাটি। এর মধ্যে যানজট। আমরা আশপাশের মানুষ হেঁটে চলা ছাড়া যানবাহনের চিন্তাও করতাম না। এখন ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করা হচ্ছে শুনে খুব ভালো লাগছে।’ প্রকল্প পরিচালক ও এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুশান্ত কুমার পাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগামী ২৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করবেন। ফ্লাইওভারটি এখন রঙকালিসহ সাজানোর কাজ চলছে। এই ফ্লাইওভারটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার মাধ্যমে নগরীর যানজট অনেকাংশে কমে আসবে।’প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ তিন তলা বিশিষ্ট চার লেনের এই ফ্লাইওভারটি ভূমিকম্প সহনশীল। এটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, যা রিখটার স্কেলে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহ্য করতে পরবে। এর প্রতিটি পিলার ১৫০ মিটার গভীর পর্যন্ত করা হয়েছে। এর বিভিন্ন জায়গায় ৮টি বড় মোড় ও তিনটি রেলক্রসিং রয়েছে।উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর শুরু হওয়া ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের নভেম্বরে। তবে নকশায় ত্রুটি, সঠিক নকশা পেতে দেরি, ড্রয়িং-ডিজাইনসহ বিভিন্ন জটিলতায় বেশ কয়েকবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।