তিন মাস লন্ডনে কাটানোর পর গত ১৮ ই আক্টোবর দেশে ফেরেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।পরদিন দুর্নীতির দুটি মামলায় আদালত থেকে জামিন নেন তিনি।এরপর রবিবার সন্ধ্যা রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে এর গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক করেন। বৈঠকের পূর্ব নির্ধারিত সময় ৩০ মিনিট হলেও দুজনের ইচ্ছাতেই শেষ পর্যন্ত তা ৪৫ মিনিট স্থায়ী হয়।
সুষমা স্বরাজের সাথে বৈঠকে আলোচিত বিষয় পর্যালোচনা এবং সে ব্যাপারে দলীয় নেতাদের অভিমত ও পরামর্শ গ্রহণের উদ্দেশ্যে গতকাল সোমবার রাত পৌনে নয়টায় শুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিদেশ থেকে ফেরার পর প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন বেগম খালেদা জিয়া।
দলের নীতিনির্ধারণী এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, আবদুল মঈন খান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বৈঠকে নানান বিষয় উঠে আসলেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায় সুষমা স্বরাজের সাথে বেগম জিয়ার বৈঠকের নানাদিক। এসময় খালেদা আসন্ন নির্বাচনে ভারতের সাহায্য পাওয়ার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ভারত কোনোভাবেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে রাজি নয় বলে জানান তিনি।
বৈঠকে দলীয় নেতারা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি ব্যপারে সুষমা`র মূল্যায়ন সম্পর্কে জানতে চান তার কাছে। এমন জিজ্ঞাসার জবাবে খালেদা দলীয় নেতাকর্মীদের অতীতের বিভিন্ন সময়ে ভারত বিদ্বেষী বক্তব্যে ভারতের রাজনৈতিক মহলে বিএনপির সমন্ধে নেতিবাচক মনোভাব তৈরী হয়েছে বলে জানান।উল্লেখ্য, ভারতের সাথে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষর হওয়া সহ বিভিন্ন সময় বিএনপির উচ্চপর্যায়ের নেতাদের গনমধ্যমে দেয়া বক্তব্যে তারা সরকারকে `ভারতের দালাল` এবং ভারত বাংলাদেশ থেকে অতিরিক্ত অর্থনৈতিক সুবিধা আদায় করেছে যে অভিযোগ করেছেন তা এমন নেতিবাচক মনোভাব তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে সুষমার অভিযোগের ব্যাপারে স্পষ্ট ভাষায় খালেদা জানান, গণমাধ্যমে দলের নেতাদের এমন বক্তব্যে বাংলাদেশ ও অন্তর্জাতিক দুইক্ষেত্রেই ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন সুষমা।
বৈঠকের শেষ পর্যায়ে দলীয় নেতাদের ভারত বিদ্বেষী যেকোনো ধরনের বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেন খালেদা জিয়া। এসব আলোচনার পাশাপাশি আসন্ন ৭ নভেম্বর “বিপ্লব ও সংহিত ” দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েও কথা হয় বৈঠকে। এছাড়াও মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেখতে বেগম জিয়া আগামী রোববার কক্সবাজার যাবেন বলেও জানানো হয়।