সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামীর।
সরকারকে পজিটিভ রাজনীতির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি রাস্তা বের করুন। যাতে সকলের নিকট একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করা যায় এবং এতে সাধারণ মানুষ যাতে তাদের ভোট দিতে পারে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।
এই সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে, পায়ের নিচে মাটি নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারা সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে চায় কিন্তু এই দেশের ইতিহাস আছে। যাদের ওপর ভর করে ক্ষমতা চালাচ্ছেন জনগণ জেগে উঠলে সময় এলে এরাও পাশে থাকবে না।’
সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যে সংলাপ করছে এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে কী না-তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ইসি দুই মাস ধরে যে সংলাপ করেছে সেটি একটা লোক দেখানো আইওয়াস। সংলাপে অংশ নেওয়া সবাই বলেছে যে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এখন জাতি তাকিয়ে আছে ইসি কি করে? কিন্তু ইসি কিছুই করতে পারবে না। কারণ সরকারের বাইরে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কাজ করার শক্তি নেই। এরপরও আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, তারা নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে কী না, যাতে মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এই সরকার মানুষকে ভয় পায় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারেক রহমানকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায়। সেজন্য তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে। এই সরকার সম্পূর্ণরুপে মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে গেছে। এজন্য ক্ষমতায় টিকে থাকতে অপকৌশল নিতে হচ্ছে। এজন্য মামলার অপকৌশল নিয়েছে তারা।
তিনি বলেন, সরকার খালেদা জিয়ার মামলা শেষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় নিম্নকোর্ট থেকে খালাস পেলেও হাইকোর্ট থেকে সাজা দিয়েছে। বিএনপির এমন কোনো নেতা নেই যার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা নেই। এম কে আনোয়ার চলে গেলে শুধু মামলার কারণে। শেষ পর্যায়ে এসে তাকে এমন মামলা দিলো যে তিনি নিতে পারলেন না।
সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা, ‘সরকার মুখে উন্নয়নের কথা বলে আর মেগা প্রজেক্টের উদ্দেশ্য হচ্ছে মেগা চুরি। হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট করবে আর হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেবে। এই যে উড়াল সেতু কিছুদিন পরে দেখবেন তা ভাঙতে শুরু করেছে। রাস্তাঘাটে চলাফেরা করা যায় না এতো খারাপ অবস্থা।
নিত্য প্রয়োজনীয় মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘বাজারে এমন কোনো সবজি নেই, যা মানুষের ক্রয়ক্ষমতার ভেতরে আছে। গ্যাস, পানি বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। জনগণের পকেট খালি করছেন আর নিজেদের পকেট ভরছেন। ইতিহাস বলে মানুষ দীর্ঘদিন এসব সহ্য করবে না। তখন কামান দিয়ে কিছু হবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
নগর বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, সহ-সভাপতি ইউনুস মৃধা, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পটু, রফিকুল ইসলাম রাসেল, তানভীর আহমেদ রবিন, শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ