ছেলেক অপহরণ ও গুমের অভিযোগে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ১৬ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক নারী। মঙ্গলবার শহরতলীর শঙকরপুরের তহিদুল ইসলামের স্ত্রী হিরা খাতুন মামলাটি করেছেন।
আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় হিরা খাতুন উল্লেখ করেছেন, গত ৫ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে তার একমাত্র ছেলে সাইদ ও তার বন্ধু শাওন যশোর শহরের পৌর পার্কে বেড়াতে যায়। দুপুর ১২টার দিকে সাব্বির হোসেন নামে এক যুবক তাকে মোবাইলে ফোন করে জানায়- পুলিশ সাইদ ও শাওনকে পৌর পার্ক থেকে আটক করেছে। খবর পেয়ে তিনি পৌর পার্কে যান এবং দেখতে পান পুলিশ সাইদ ও শাওনকে ধরে গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে।
এ সময় তিনি দৌড়ে গাড়ির কাছে গিয়ে পুলিশের কাছে তার ছেলেকে আটক করার কারণ জানতে চান। কিন্তু পুলিশ জবাব না দিয়ে তাকে থানায় গিয়ে যোগাযোগ করতে বলে। এরপর তিনি থানার সামনে গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। কিন্তু তাকে থানায় ঢুকতে দেয়া হয়নি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুই পুলিশ সদস্য তাকে ডেকে ছেলেকে ছাড়ানোর জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু তিনি টাকা দিতে না পারায় পুলিশ তার ছেলেকে ছাড়েনি।
৭ এপ্রিল তিনি পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানতে পারেন যে, তার ছেলে সাইদ ও শাওন পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গেছে। এ খবর পেয়ে তিনি থানায় যান। তবে পুলিশ তাকে কোনো সহায়তা করেনি। পরে আদালতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে পুলিশ এ ঘটনায় কোর্টে একটা মামলা করেছে। ওই মামলায় তার ছেলে ও শাওন পালিয়ে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর তিনি ছেলের সন্ধানে অনেকবার পুলিশের কাছে গেছেন। বারবার পুলিশ তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। এক পর্যায়ে ছেলের সন্ধান চেয়ে তিনি গত ৩০ মে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। তারপরও তিনি ছেলে ও ছেলের বন্ধুর খোঁজ পাননি।
বাদী সন্দেহ পোষণ করে বলেছেন, দুই লাখ টাকা ঘুষ না পেয়ে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ছেলে ও ছেলের বন্ধুকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ ও তাদের লাশ গুম করে ফেলতে পারে। এজন্য তিনি ন্যায় বিচারের আশায় আদালতে মামলা করেছেন। যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক শাহিনুর রহমান পিটিশনটি গ্রহণ করে এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক দাবি করে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহউদ্দিন শিকদার বলেন, কুচক্রি মহলের ইন্ধনে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্যই মামলাটি করা হয়েছে।