প্রধানমন্ত্রীর দেখানো পথে হেঁটে এবার দলের তহবিলে স্বচ্ছতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য বিজেপি৷ এবার নগদে অনুদান নিষিদ্ধ করেদিল তারা৷ চেক ও ই-ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেই এবার থেকে অনুদান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্ম শিবিরের রাজ্য নেতৃত্ব৷
রাজ্য বিজেপির উদ্যোগে ৬ ডিসেম্বর, বাবা সাহেব আম্বেদকরের জন্মদিন থেকে রাজ্যের সমস্ত ব্লকে শুরু হতে চলেছে ‘আজীবন সহযোগী নিধি’ কর্মসূচী৷ যা শেষ হবে ২৫ ডিসেম্বর, অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনে৷ এই কর্মসূচীতে ব্লকের প্রতিটি বাড়িতে দিয়ে অনুদান যোগাড় করবেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব থেকে তৃণমূল স্তরের কার্যকর্তারা৷ যা জমা পড়বে দলের রাজনৈতিক তহবিলে৷
তবে এই কর্মসূচীতে থাকছে একটি বিশেষ চমক৷ রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, যে কোনও মূল্যের অনুদান নেওয়া হবে চেক বা ই-ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে৷ সেক্ষেত্রে প্রতিটি অনুদানকারীকে নির্দিষ্ট রসিদ দেওয়া হবে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে৷ আয়কর দফতরের নিয়ম মেনে, ২ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিলে অনুদানকারীর নাম উল্লেখ করা হবে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে৷ বিষয়টি আরও স্পষ্ট করেছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু৷ তিনি বলেন, ‘‘এক প্রকার কালো টাকাই নিয়ন্ত্রণ করে রাজনীতিকে৷ কালো টাকা বন্ধে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ বিজেপি সর্বদাই কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে এসেছে৷ তাই কেউ ২ টাকা, ৫ টাকা, ১০ টাকা যা অনুদান দেবে, তা নেওয়া হবে চেকের মাধ্যমে৷’’
রাজনৈতিক দলের তহবিলে রয়েছে কালো টাকা৷ দেশ তথা রাজ্য রাজনীতিতে একাধিকবার উঠেছে সেই অভিযোগ৷ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তহবিলে রয়েছে ৯ কোটি ১৮ লক্ষ ৮৪ হাজার ১১৫ কোটি বিতর্কিত টাকা৷ কিছুদিন আগেই সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা সামনে এনেছিলেন বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ৷ বেশ কিছু নথি সাংবাদ মাধ্যমের হাতে তুলে দিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে তিনটি জায়গা তৃণমূল কংগ্রেসের তহবিলে জমা পড়েছিল সেই টাকা৷ যা তৃণমূল কংগ্রেস তাদের বার্ষিক অডিট রিপোর্টে দেখিয়েছিল অনুদান হিসাবে৷ কিন্তু, ওই সংস্থা গুলি তাদের বার্ষিক অডিট রিপোর্টে এই টাকাকে দেখিয়েছিল ঋণ হিসাবে৷
এই তৃণমূল সাংসদ আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, যদি শাসক দলের অডিট রিপোর্টকে সত্যি মেনে এই বিপুল টাকাকে আর্থিক অনুদান হিসাবে ধরে নেওয়া হয়, তবে তা ‘কালো টাকা’ হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসের তহবিলে জমা পড়েছিল৷ অন্যদিকে, যদি ওই সংস্থা গুলির অডিট রিপোর্টকে সত্যি মেনে নেওয়া হয় তবে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে ওই সমস্ত সংস্থাকে সব টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে৷ এখানেই শেষ নয়, রাজনৈতিক দলের তহবিলে কালো টাকা থাকলে নির্বাচন কমিশনের নিয়মের কথা উল্লেখ করে তিনি উস্কে দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ‘ঘাসফুল’ প্রতীক বাতিল হওয়ার প্রসঙ্গ৷