বাগেরহাটের চিতলমারীতে প্রতিপক্ষের লোকজন একটি হিন্দু বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় দুই প্রতিবেশী জমির বিরোধের জেরে ঝষিকেশ মণ্ডল ও তার স্ত্রী শেফালি রাণী মণ্ডলকে ঘরে তালাবদ্ধ করে পুড়িয়ে মারার উদ্দেশ্যে তারা এই আগুন দেয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের আড়ুলিয়া গ্রামের ঝষিকেশ মণ্ডলের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। বসতঘর পুড়ে যাওয়ায় ঝষিকেশ মণ্ডল তার পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।
আগুনে ঝষিকেশ মণ্ডলের বসত ঘর ও রান্নাঘর এবং পাশের সুনীল মণ্ডলের একটি রান্নাঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। আগুনে ঝষিকেশের ঘরে থাকা আলমারি, রেফ্রিজারেটর, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র, নগদ টাকাসহ অন্তত দশ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।
বুধবার সকালে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ ক্ষতিগ্রস্ত ঝষিকেশের বাড়ি পরিদর্শন করে ঘর তৈরির জন্য তাৎক্ষণিকভাবে চার বান্ডিল ঢেউটিন বিতরণ করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন নগদ দশ হাজার টাকা দেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ঝষিকেশ মণ্ডল অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় নরেশ গোসাই ও ফারুক শেখের সঙ্গে আমার জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। তারা আমাকে আমার ভিটামাটি থেকে উৎখাত করতে পাঁচটি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তার মধ্যে আমি তিনটায় বেকসুর খালাস পেয়েছি, আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। প্রতিদিনের মত আমি ও আমার স্ত্রী রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত দেড়টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত আমার বাড়িতে ঢুকে আমার ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন দেখতে পেয়ে আমি ও আমার স্ত্রী ঘুম থেকে উঠে দরজা ভেঙে বাইরে আসি। আগুনে আমার দুটি ঘর ও আমার পাশের সুনীল মণ্ডলের একটি ঘর পুড়ে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেছে। এতে আমার সব মালামাল পুড়ে অন্তত দশ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমার প্রতিপক্ষ ফারুক ও নরেশ বিভিন্ন সময়ে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে হত্যা করতে আমার ঘরে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ তার।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ বলেন, আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঝষিকেশ মণ্ডলের বাড়ি পরিদর্শন করেছি। বসতঘর তুলতে তাকে চার বান্ডিল ঢেউটিন, গাছের গুঁড়ি এবং শ্রমিক দেয়া হয়েছে। তার বাড়িতে কারা এই আগুন দিয়েছে তা তদন্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ঝষিকেশকে নগদ দশ হাজার টাকা সাহায্য দেয়া হয়েছে। তার সাথে স্থানীয় ফারুক ও নরেশের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে কিনা তদন্ত করতে পুলিশের কাছে দাবি জানান তিনি।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুকুল চন্দ্র বলেন, কারা এই বাড়িতে আগুন দিয়েছে- তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে কথা বলতে ফারুক শেখ ও নরেশ গোসাইয়ের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।