মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা ও গাইবান্ধার সাবেক সংসদ সদস্য আবু সালেহ মো. আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে থাকা তিনটি অভিযোগের দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর প্রথম অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ বুধবার এই রায় দেন। এর আগে সকালে সাড়ে ১০টার পর ১৬৬ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর এখন পর্যন্ত ২৮টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এটা ট্রাইব্যুনালের ২৯তম রায়।
আজিজ ছাড়া বাকি আসামিরা হলো, রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১), আব্দুল লতিফ (৬১), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৫৯), নাজমুল হুদা (৬০) ও আব্দুর রহিম মিঞা (৬২)। আসামিদের মধ্যে লতিফ ছাড়া সবাই পলাতক।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজ মিয়া ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত চার দলীয় জোটের অধীনে গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ-১ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। বাকিদের মধ্যে রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১) জামায়াতের সুন্দরগঞ্জ থানা শাখার সক্রিয় সদস্য, আব্দুল লতিফ জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পর্যায়ের নেতা, আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী মুক্তিযুদ্ধের আগে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সক্রিয় নেতা ছিলেন। বাকিরাও বিভিন্ন সময়ে জামায়াতের সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
অভিযোগ তিনটি হলো-
অভিযোগ-২: ১৯৭১ সালের ৯ অক্টোবর বিকাল আনুমানিক ৪টার দিকে আসামিরা গাইবান্ধার মাঠেরহাট থেকে ছাত্রলীগের নেতা বয়েজ উদ্দিনকে আটক করে মাঠেরহাটের রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে। পরের দিন সকালে তাকে সুন্দরগঞ্জ থানা সদরের পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং ৩ দিন আটকে রেখে নির্যাতন করার পর ১৩ অক্টোবর বিকালে গুলি করে হত্যা করে লাশ মাটি চাপা দেয়।
অভিযোগ-৩: ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত আসামিরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানাধীন ৫টি ইউনিয়নের নিরীহ, নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের ১৩ জন চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে অবৈধভাবে আটক ও ৩ দিন ধরে নির্যাতন করে। এরপর তাদেরকে নদীর ধারে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে লাশগুলো মাটি চাপা দেয়।