২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ রাত ৪:১৫

মুরাদনগরে গুজব তুলে হিন্দু বাড়ী মন্দির ভাংচুর লুট -অগ্নিসংযোগ

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ রবিবার, নভেম্বর ১, ২০২০,
  • 2099 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজবে কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর লুট ও আগুন ধরানো হয়েছে।

হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মধ্যে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়িও রয়েছে।

এই ঘটনার মধ্যে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার দুপুরে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার জানিয়েছেন।

স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গ্রেপ্তার দুজনের বাড়িতে আগুন ধরানো হয়েছিল জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেছেন, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন।

গ্রেপ্তার দুজনের একজন পূর্ব ধউর (পূর্ব) ইউনিয়নের কুরবানপুর এলাকার একটি কিন্ডার গার্টেনের প্রধান শিক্ষক। অন্যজন পাশের আন্দিকোট গ্রামের বাসিন্দা।

পূর্ব ধউর (পূর্ব) ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হলেন অধ্যাপক বনকুমার শিব।

ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজবে শনিবার রাতে থেকে কুরবানপুর গ্রামে একদল বিক্ষোভে নামে, যা রোববারও চলতে থাকে।

ফরাসি সাময়িকীতে হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশকে কেন্দ্র করে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে ক্ষোভ চলছে।

তার মধ্যে মুরাদনগরের ওই গ্রামে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের একজন সেই কার্টুন সমর্থন করে ফেইসবুক কথা বলেছেন।

আবুল খায়ের নামে স্থানীয় একজন বলেন, কুরবানপুর গ্রামের এক ব্যক্তি ফ্রান্সে থাকেন। তিনি ও ওই কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক তাদের ফেইসবুক আইডি থেকে কার্টুনকে সমর্থন করে পোস্ট ও কমেন্ট করেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

স্থানীয়দের কাছে ফেইসবুকের যে স্ক্রিনশটটি ছড়িয়েছে, তাতে দেখা যায় ফ্রান্স প্রবাসী ওই ব্যক্তি একটি পোস্টে লিখেছেন, “ফরাসি প্রেসিডেন্ট যে সব অমানবিক চিন্তাভাবনাকে শায়েস্তা করার যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়।” তার তাতে কুরবানপুরের ওই ব্যক্তি মন্তব্য লিখেছেন- ‘স্বাগতম প্রেসিডেন্টের উদ্যোগকে’।

এই কথোপকথন ধরেই গুজব ডালপালা মেলে, আর তা থেকে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তারের পরও পূর্ব ধইর (পূর্ব) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বনকুমার শিবের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা হয়।

খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।

এরপর কুরবানপুর ও আন্দিকোট গ্রামে ৪ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

বাঙ্গুরা থানার ওসি কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “থানা পুলিশ মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে ওই প্রধান শিক্ষক ও আন্দিকোট গ্রামের আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।”

দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে রোববার বিকালে তাদের কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়। এই সময় তাদের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলেও বিচারক তা নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর , “আমি এবং পুলিশ সুপার সাহেব দুজনেই ঘটনাস্থলে এসেছি। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।”

হিন্দু বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “উত্তেজিত লোকজন তিনটি বাড়িতে আগুন দিয়েছে। যে দুজন গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের বাড়িতে এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে।”

হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে- প্রশ্ন করলে জেলা প্রশাসক বলেন, “প্রশাসন ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করে দিয়েছে।”

ওসি কামরুজ্জামান বলেন, ভাংচুরের ঘটনায় আরেকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। ভাংচুরের ভিডিও দেখে মামলায় আসামি করা হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »