কৃত্তিবাাস ওঝা
প্রথম অধ্যায়
পর্ব ― ৪
দূরবর্তী গ্রামের নমঃশূদ্ররা আমাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অপচেষ্টার সংবাদ শুনে, তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, লাঠি-সোটা নিয়ে শোরগোল তুলে আমাদের সমর্থনে এগিয়ে এলো। তাদের আগমন বার্তা পেয়ে, আমাদের এলাকার বেশকিছু নমঃশূদ্র তরুণ- সমাজপতিদের ফতোয়া অগ্রাহ্য করে, লাঠি- চল- লেজা- রামদা নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে উপস্থিত হলো।
দু’পক্ষ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। ঠাউরাইন সেন্টুকে ডেকে সঙ্গে নিয়ে, নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।
বিমাতা ছুটে গিয়ে, ঠাউরাইনের পা জড়িয়ে ধরে বললো, “মা ঠাউরইন, তুমি আমলের বাপেরে একলা ফালাইয়া কোম্মে যাও।”
ঠাউরাইন বিরক্ত হয়ে পা ছাড়িয়ে নিয়ে বললেন,”পোড়া কপালি দিলি ছুঁইয়া! রাত্তির দুফারডার কালে পুহইরে লাইম্মা ডুব দেতে হইবে। হরইয়া আ্যাহন একলা না। হ্যার পক্ষে ম্যলা লোক আইয়া হাজির হইছে, দ্যাহো না! তোগো পক্ষই তো দ্যাখতে আছি ভারী।”
“মা ঠাউরাইন, ব্যাবাক্কে খালি তাল দেবে, গুড় দেবে না কেও। এ্যহন যদি এইহানে খুনখারাপি হয়, অমলের বাপেরে পুলিশে ধরইয়া লইয়া যাইবে। মোর পেলাপানডি দ্যাখপে কেডা! তুমি ছাড়া ফ্যাচাং কেও ভাঙ্গতে পারবে না।”
“ভগবান আছে। কিচ্ছু অইবে না। ভগবানেরে ডাক।”
আমাদের পক্ষে লোকসংখ্যা বেশি দেখে, বর্ণহিন্দু নেতাদের সুর নরম হয়ে গেল। এক পুরোহিত, আমাদের একটা জলচকি পুকুর থেকে ধুয়ে এনে, ধুতির খুঁট দিয়ে মুছে, ঠাউরাইনের সামনে পেতে দিয়ে বলল, “বড়মা, এইডার উপার বয়েন।”
“ওরে মোর কি বওয়ার সোমায় আছে! যাইয়া আবার নাওন লাগবে।”
“বড়মা, এতো রাত্তিরে আবার নাইবেন কি করতে! কাপড়ডা বদলাইয়া গায় তুলসীর ছিডা দেবেন। শুদ্ধ হইয়া যাইবেন।”
“দ্যাখ ছ্যামড়া, তুই হিদিন মোর হাতের উপার হইছো। তুই মোরে শাস্তোর শিখাইতে আইছো! যজমানি করো দেইখ্যা ভাবজো, ব্যাবাক শিইখ্যা ফালাইছো। পোলাপান বড় হইছে, থাবোড় চোপাড় খাইস না। বেজাতের ছোঁয়া লইয়া ঘরে ঢুকুম! মোর ঘরে প্রতিষ্ঠিত নারায়ন। ঠাকুরেরে রোজ ফুল জল দেওনের লইগ্গা, নাতিডারে(সেন্টু) লইয়া মুই গেরামে পড়ইয়া রইছি। নাইলে পোলারা মোরে টাউনে নেওনের লইগ্গা, যে দাপাদাপি করতে আছে।”
এক প্রবীণ বর্ণহিন্দু, পুরোহিতকে বললো, “ঠাহুর তোরা ভ্যাজাল বাওন। বৌঠারইনেরা হইছে কুলীন বাওন। বোঝজো?”
দাদা, ঠাউরাইনের কাছে গিয়ে, পেটের চামড়ায় টান দিয়ে বললো, “মোর চামড়ার নিচের রক্ত যেরহম লাল, তোমার চামড়ার নিচের রক্তও হেইরহম লাল। তোমারে যে ঠাহুর বানাইছে, মোরেও হেই ঠাহুরই বানাইছে, বোঝলা ঠাউরাইন দিদা।”
বাবা, দাদাকে ধমক দিয়ে বললো, “হগোল সোমায় ফ্যাডোর ফ্যাডোর ভালো লাগে না। যেয়া বোঝ না, হেইয়া লইয়া কথা কইতে আবি না। হাতের পাঁচটা আঙুল সোমান হয় না। ভগবান ব্যাবাক্কেরে সোমান বানায় নায়। উঁচা নিচা আছে।”
সমবেত নমঃশূদ্রদের মধ্য থেকে এক কলেজ পড়ুয়া তরুণ বাবাকে বললো, “কাঘু, এই কথাডা কোলোম ঠিক কইলা না। উঁচা নিচা হইলো গুনে-যোগ্যতায়। বোঝলা? জন্মসূত্রে না। ধর্মগ্রেন্থে পরিস্কার ল্যাহা আছে।”
“বাবা, তোরা দুই কলম বিদ্যা হিইখ্যা ব্যাবাক বুইজ্ঝা হালাইছো! বুড়াবুড়িরা যা এতকাল মাইন্না আইছে, হেয়ার বাইরে মুই যাইতে পারুম না; অন্তত যতদিন চন্দ্র-সূর্য ওডবে।”
“কাঘু, মোগো বদলাইতে হইবে। নাইলে মোরা সমাজের অন্যায়-অইত্যাচার প্রিতিহত হরুম ক্যামনে!”
বর্ণহিন্দু ও নমঃশূদ্রদের বসার জন্য, আমরা ঠাউরাইনের দুই পাশে আলাদা ভাবে হোগলা পেতে দিলাম।
প্রধান বক্তা ঠাউরাইন বলে যেতে লাগলেন,”… আগের হেই সোমাজ-নোমাজ আ্যাহন কি আর আছে! এই সমস্ত অনাচারের লইগ্গাই আমাগো আ্যাতো অধঃপতন; শ্যাকের রাজত্ব। আগে এই তল্লাটে কোন শ্যাক হিন্দুর দিগে চক্ষু তুইল্লা চাইতে সাহস পাইছে! আ্যাহন ব্যাবাক হিন্দু গুলাইনে শ্যাকের সামনে ভিজা বিলই হইয়া যায়! এদিগে এ্যরা জাইত্তা ভাইর লগে বাঘ-সিংহ, কারে কেডা বাঁশ দেবে…”
দেখতে দেখতে আমাদের এলাকার প্রায় সমস্ত নমঃশূদ্র পুরুষ ও বেশ কিছু সংখ্যক নারী, আমাদের বাড়িতে এসে হাজির হলো। নমঃশূদ্র সমাজপতিদের অনেকে আড়াল-আবডাল থেকে উঁকিঝুঁকি দিয়ে, ধীরে ধীরে সামনের কাতারে চলে এলো। বর্ণহিন্দুদের হাতের মশালগুলো নিভে গেলো অথবা নিভিয়ে দিয়ে, তারা একে একে কেটে পরলো।
বর্ণহিন্দু সমাজপতিরা যখন বুঝতে পারলো, তাদের পিছনের জনবল ভেগে গেছে― অমনি তাদের সুর একেবারে নরম হয়ে গেল। যেন বিনয় অবতার! যে লোক বাবাকে ‘হরইয়া’ – বলে ডাকতো, সেও একেবারে গদগদ কন্ঠে বাবাকে ‘ভাইডি’ সম্বোধন করে বললো, “…তুমি তো ঠিক কামডাই হরছো। পোলাপানেরে শাসন করা দরকার আছে। তুমি ঐ ছ্যাড়া দুইডারে পাচইন(গরু পিটানো লাঠি) দিয়া পিডাইলা না ক্যান!”
“দুইডা থাবড় মারছি, হেরফান্নে মোর ঘরে আগুন ধরাইতে আইছো, পাচইনের বাড়ি দেলে কি হরতা! মোরে সুউদ্দা পোড়াইতা, হেইয়া না।”
নমঃশূদ্রদের পক্ষ থেকে উচ্চস্বরে বাক্যবাণ নিক্ষিপ্ত হতে লাগলো। বর্ণহিন্দু সমাজপতিরা মাথা নত করে চুপচাপ বসে রইলো। ঠাউরাইন পরিস্থিতি সামলে নিয়ে, বর্ণহিন্দু সমাজপতিদের নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলেন।
প্রস্থানরত ঠাউরাইনের উদ্দেশ্যে এক নমঃশূদ্র কিশোর বললো, “ঠাউরমা ডোউপ্পা(কচুরিপানা পূর্ণ) পুহইরে লাইম্মা কোলম ডুব দেওয়া লাগবে। নাইলে রাত্তিরে ভূতে নিয়া তোমারে চুবাইবে।”
পিছন থেকে আরেক কিশোর সহাস্য বদনে বলে উঠলো, “ল মোরা হগোলডি মিইল্লা বুড়িরে ঢোউপ্পা পুহইরে লামাইয়া চুবাইয়া দি; ভূত ছাড়ইয়া যাইবে হানে।”
একজন নমঃশূদ্র সমাজপতি, ঠাট্টা- বিদ্রুপকারী কিশোরদ্বয়কে কড়া ধমক দিলো। তার সাথে সুর মিলিয়ে আরেক সমাজপতি হালকা ধমক দিয়ে ঠাউরাইনের উদ্দেশ্যে বললো,”মাসিমা পোলাপানের কথায় আম্নে কোলম মনে কষ্ট রাইখ্যেন না।”
যেতে যেতে ঠাউরাইন বললেন,”ওরে মুই বুড়া হইছি, তয় আ্যহোনো পাগল হই নাই রে। নাতিরা ঠাউরমার লগে একটু-আধটু রগর করবে না, তো করবে কার লগে!”
ঠাউরাইন ও বর্ণহিন্দু সমাজপতিরা শ্রবণসীমার বাইরে চলে যাওয়ার পর বাবা বললো, “এই বুড়ি হইছে শয়তানের নারাজি; আর হ্যার নাতিডা হইছে বিষবাডইল! রোসোনের কোয়ার ব্যাবাক …(পশ্চাৎদেশ) একখানে।”
বাবার এই উক্তি আমার ভালো লাগলো না। আমাদের বিপদের সময় যত লোকই আসুক, বাল্যবন্ধু সেন্টু সাবার আগে এসে অমানুষদের ঠেকাতে চেষ্টা করেছে; এরপর ঠাউরাইন আমাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে শক্ত ভাষায় কথা বলেছেন।
দূরবর্তী গ্রামের বাবার বন্ধুস্থানীয় একজন বিমাতাকে বললো,”বৌদি, তুমি আ্যাতো ডড়াইয়া গ্যালা ক্যা! মোরা আল্লাম না; এক্কালে বামনি মাথারির(মহিলা) পাও দুইডা হাবডাইয়া ধরলা! মোরা এই বজ্জাত গুলাইনের পাও ধরি দেইখ্যাই, অজাতের বাচ্চারা লাই পাইয়া মাথায় উইড্ডা বইছে।”
এলাকার বিরাট একদল মুসলমান প্রতিনিধিদল আমাদের বাড়িতে এসে হাজির হলো। সদ্য সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দেওয়া এক মুসলমান যুবক, যে চাকরিতে যোগদানের আগে বাবাকে ‘কাঘু’ বলে ডাকতো; সে বাবার নাম ধরে বললো, “হরলাল, তুমি মোগো একটু ডাকতে পারলা না। বামনাগো উচিত শিক্ষা দিয়া ছাড়ইয়া দিতাম―ক্যামনে তোমার ঘরে আগুন লাগায়! তোমরা এই অইত্যাচার আর কতদিন মুখ বুইজ্জা সহ্য করবা!”
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক মুসলিম তরুণ সবার উদ্দেশ্যে বললো,”আ্যাহন আর বওন-ঠাহুরগো বেইল নাই। ব্রাহ্মণ্যবাদী ষড়যন্ত্রকারীরা আমাগো ঠগাইয়া কলিকাতা-আসাম-আগরতলা লইয়া গ্যাছে। শুয়ারের বাচ্চাগো লইগ্গা আমাগো ইস্ট পাকিস্তান সাইজে ছোড হইয়া গ্যাছে। ব্রাহ্মণ্যবাদী অত্যাচার অইতে রক্ষা পাওনের লইগ্গা মোসলমান-নোমো মিইল্লা এই দ্যাশ বানাইছে, বোঝজ্যেন! এই অঞ্চলের কৃতি সন্তান নোমো নেতা যোগেন মণ্ডল, ব্রাহ্মণ্যবাদী ইন্ডিয়ার লগে হাত মিলায় নাই। সে নোমোগো লইয়া পাকিস্তানে যোগ দেছেলো কিরফান্নে। যোগেন বাবু চাইছিল- ইন্ডিয়ার ক্রিমিনালগো নির্যাতন দিয়া নোমোগো সেইভ হরতে।”
দূর গ্রামের এক নমঃশূদ্র সমাজপতি বললো,”যোগেন বাবু হেই কবে রায়টের বচ্ছর, মোগো ফালাইয়া থুইয়া কইলকাতা পলাইয়া গ্যাছে!”
এক প্রবীণ নমঃশূদ্র বললো, “যোগেন বাবু তো আর নাই। ঐ দ্যাশে যাইয়া, মোর পিসাতো ভাইর হউর বাড়ির ধারে থাকতো। গণ্ডগোলের (বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ) আগেই দেহ রাখছে।”
এক শিক্ষিত নমঃশূদ্র যুবক বললো,”যোগেন বাবু নোমোগো স্বার্থ দ্যাহে নায়, উনি নিজের স্বার্থ দ্যাখছে। মন্ত্রী হওয়নের লইগ্গা পাকিস্তানে যোগ দিছে। নোমোগো স্বার্থ চিন্তা করলে, উনি এই রকম ভাবে মোগো ফালাইয়া থুইয়া, ভারতে পলাইয়া যাইতে পারতো না। যাওয়া যহন লাগবেই, হেয়াতে প্রেরথম চোডে ভারতে যোগ দেওয়াই ভালো আল্লে। মোগো জাগা-সোম্পত্তিডুক থাকতো, এই দ্যাশের নাহান এনিমি(শত্রু সম্পত্তি)-থে ব্যাবাক হাতছাড়া হইতো না।”
মধ্যবয়স্ক এক মুসলমান মুখ ভেংচিয়ে বললো,”ভারতে যোগ দেওয়া ভালো আল্লে! বাবুরা তোগো ঘরে ওঠতে দেয়! ভারতে যাইয়া উঠতি কোন চুলায়।”
এলাকার অভিজাত মুসলিম পরিবারের এক লোক বললো, “ব্রাহ্মণ্যবাদীরা অগো ব্রেইন ওয়াশ করইয়া ফালাইছে। বামনারা হইছে ইন্ডিয়ার দালাল। ডিস্টারভেঞ্চের সোমায়(১৯৭১ সাল) আমাগো পাকিস্তান আর্মি বামনাগো ভ্যানিশ করতে চাইছিলো। এই দেশীয় দালালগো লইগ্গা পারে নায়। দালালরা ঐ সোমায় ইন্ডিয়ারে হেল্প করছে। এই বামনাগো সব কিছুতে বয়কট করতে হইবে। হুদ্দুর(কায়স্থ) আহাম্মক গুলাইনে বামনাগো লগ ছাড়ে না। ননসেন্স গুলাইনরে উচিত শিক্ষা দেওয়া দরকার।
দাড়িওয়ালা এক লোক বললো, “ব্রাহ্মণ্যবাদী ইন্ডিয়ার ষড়যন্ত্রে মোগো দ্যাশ ভাঙ্গছে। এইয়ার প্রিত্তিশোধ নিমুই নিমু। ইন্ডিয়ারে না পাই, ইন্ডিয়ার ল্যাজ গুলাইন আছে না, ঠাহুর গুলাইন। হালাগো …(পুরুষাঙ্গ) কাইড্ডা ফালাইতে হইবে।…(মহিলা) গুলাইনরে গণ্ডগোলের বচ্ছরের নাহান উডাইয়া লইয়া, কোলার মইধ্যে ফালাইয়া …(ধর্ষণ) করতে হইবে।”
“ভারতের ব্রাহ্মণ্যবাদী ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করনের লইগ্গাই প্রেসিডেন্ট সাবের ‘খাল কাটা কর্মসূচি’। খাল দিয়া পাকিস্তানের গানবোট আইবে। এবার আর ভারত আউগ্গাইতে সাহস পাইবে না। দুই পাকিস্তান আবার একত্তর হইবে; হেইয়ার পর ইন্ডিয়ারে ভাইঙ্গা টুকরা টুকরা করইয়া ফালামু… ”
দাদা আমাকে ডেকে দূরে নিয়ে গিয়ে বললো, “মদনা, এই শ্যাক গুলাইনে ভারতেরে দ্যাখতে পারে না কেন জানো ―যে বচ্ছর মেলেটারি আইছিলো, হেইবার ইন্ডিয়া যুদ্ধে শ্যাকাগো হারাইয়া দেছেলো। শ্যাকেরা জেতলে, এই দ্যাশে একটা হিন্দুও বাইচ্চা থাকতো না। বাওন-হুদ্দুর হারামি গুলাইনের কোন জ্ঞেয়ান-বুদ্ধি নাই; হালাগো …(অশ্লীল) ভরা হিংসা। হালারা মোগো দ্যাখতে পারে না; হেইয়ার লইগ্গা মোরা একত্তর হইতে পারি না। নাইলে হিন্দুস্তানের সামনে কেউ আউগ্গাইতে সাহস পাইতো!”
“দাদো, ভারতে কি খালি বাওনরাই থাহে?”
“বাওন-নোম-হুদ্দুর-শ্যাক ব্যাবাক জাত থাহে।”
“দাদো, হাচ্চাইও কি ভারত খারাপ? মোগো নোমো জাইত্তাগো বোলে ঢোকতে দেয় না।”
“তুই এই শয়তান গুলাইনের কথা বিশ্বাস করো! ভারত মোগো বল-ভস্যা। বিরাট দ্যাশ, বুঝলি।”
“দাদো, মুই তো দ্যাখতে আছি বাওন-হুদ্দুর-শ্যাক ব্যাবাক্কেই পাজি।”
“রেজাকার জাত হইছে সবচাইক্কা বেশি খারাপ। দ্যাহোনা …(অশ্লীল গালি) কিবিলে উস্কানি দেতে লাগজে! হিন্দুগো মইধ্যে গিরিঙ্গি বাঝাইয়া দিয়া, ক্যামনে হিন্দু সোম্পত্তি দহল হরবে―হালাগো খালি হেই ধান্দা। এই পাজির বাচ্চাগো লইগ্যা মোরা ছোডকালে মায়রে খুয়াইছি। মোগো জীবন কত কষ্টের! মোর বয়সী যারা, ব্যাবাক্কে হেই কবে হাইইস্কুলে ওঠছে, আর মুই রইছি মূখ্য হইয়া …”
(চলবে)