দীর্ঘ ১৮ বছর আইনি লড়াই শেষে জিতেছেন ডা. সুমনা সরকার। ২০০০ সালে ২৩তম বিশেষ বিসিএসে (স্বাস্থ্য) প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি তিনি। কারণ সে সময়ে সুমনার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক অমল কৃষ্ণ সরকারের মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে জটিলতার অভিযোগে পিএসসি মৌখিক পরীক্ষা নেয়নি। এর ১৮ বছর পর বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে সহকারি সার্জন হিসেবে সাময়িক সুপারিশ পেলেন চক্ষু চিকিৎসক সুমনা সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে সুমনা সরকারকে ২৩তম বিশেষ বিসিএসে (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের জন্য সহকারী সার্জন হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) নূর আহ্মদ বলেছেন, আদালতের রায়ের আলোকে পিএসসি তাকে ভাইবায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়। ভাইবা বোর্ডে মেধার স্বাক্ষর রাখায় আজ তাকে সহকারি সার্জন হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সুমনা সরকার বলেন, বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার সময়ে বাবা আমাকে পরীক্ষা দিতে পরীক্ষার হলে পৌঁছে দিতেন। পরে আইনি লড়াইয়েও পাশে ছিলেন। গত বছর আমার পক্ষে আদালতের রায় পেলাম, ততদিনে বাবা আর বেঁচে নেই।
জানা গেছে, ২০০৩ সালের ২৫ জুন মুক্তিযোদ্ধার সনদ সংক্রান্ত জটিলতার কারণ দেখিয়ে সুমনাসহ অনেক পরীক্ষার্থীর মৌখিক পরীক্ষার কার্ড ইস্যু করেনি পিএসসি। পরে তারা মৌখিক পরীক্ষা দিতে পারেনি। মৌখিক পরীক্ষা বঞ্চিতদের মধ্যে ২০০৩ সালে কয়েকজন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। উচ্চ আদালত তাদের রিটের শুনানি নিয়ে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেন। সে আদেশের ভিত্তিতে পরীক্ষা দিয়ে তারা নিয়োগও পান।
পরবর্তীকালে ২০০৯ সালে ডা. সুমনা সরকারও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তার করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের হাইকোর্ট মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে পিএসসি আপিল বিভাগে আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ আজ সুমনাকে মৌখিক পরীক্ষার সুযোগ দিতে পিএসসিকে নির্দেশ দিয়ে আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দেন। ফলে সুমনা সরকার প্রায় দুই দশক পর তার সেই বিসিএস পরীক্ষার ভাইভা দেওয়ার সুযোগ পেয়ে ক্যাডার হলেন।