স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে এবারের জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে ও উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশের আলোচনা চলছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে বিরূপ জলবায়ু মোকাবিলায় বিভিন্ন চুক্তিও হচ্ছে। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে আলোচনা এগিয়ে নিতে প্রভাব রাখছেন এমন পাঁচজনের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এ তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার বিবিসির প্রকাশিত বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কপ-২৬ সম্মেলনের সফলতা কিংবা ব্যর্থতা অনেকাংশে নির্ভর করছে প্রভাবশালী এই পাঁচ ব্যক্তির ওপর।
বিবিসিতে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ: ফাইভ ডিলমেকার হু উইল ইনফ্লুয়েন্স দ্য আউটকাম অ্যাট কপ-২৬’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ভূমিকা সম্মেলনের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা মানুষের মুখপাত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ৪৮ দেশের ফোরামের পক্ষে কথা বলছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একজন অভিজ্ঞ ও স্পষ্টভাষী রাজনীতিক হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, তিনি জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা কপ-২৬ সম্মেলনে তুলে ধরেছেন।
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ড. জেন অ্যালান বলেছেন, শেখ হাসিনার মতো ব্যক্তিত্ব যখন জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে মানবিকভাবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা শোনান তখন জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব সম্পর্কে বিশ্ব নেতাদের আরও ভালোভাবে জানার সুযোগ তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, শেখ হাসিনার মাধ্যমে জলবায়ু সম্মেলনে গরিব, উন্নয়নশীল এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো নিজেদের জোরালো কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে পারছে।
জেন অ্যালান বলেন, অর্থনৈতিক গুরুত্ব ছাপিয়ে এসব দেশের কণ্ঠস্বর বিশ্বদরবারে তুলে ধরছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেননা ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে একদিকে এসব দেশের কথা বলার নৈতিক অধিকার রয়েছে। অন্যদিকে জাতিসংঘের আওতায় গৃহীত যেকোনো সিদ্ধান্তের ভালো কিংবা খারাপ যেকোনো ফলাফল সরাসরি ভোগ করতে হবে এসব দেশকেই। মূলত এ কারণে কপ-২৬ সম্মেলনে আলোচনা প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনা একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
শেখ হাসিনার পাশপাশি এবারের সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা অন্যরা হলেন- চীনের বিশেষ দূত জিয়ে ঝেনহুয়া, সৌদি মধ্যস্থতাকারী আয়মান শাসলি, ব্রিটিশ মন্ত্রী ও কপ-২৬ সম্মেলনের সভাপতি অলোক শর্মা এবং স্পেনের পরিবেশগত পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী টেরেসা রিবেরা।
তাদের ভূমিকার গুরুত্ব নিয়ে বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু বিষয়ে বিভিন্ন দেশের জাতীয় স্বার্থে প্রাধান্যের ভিন্নতা রয়েছে। কিন্তু, সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান জোরদার করতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো বিভিন্ন ব্লক বা জোটবদ্ধ হওয়ায় বিষয়টি আরও জটিল রূপ নিয়েছে।
তাছাড়া, একটি দেশ একইসঙ্গে বিভিন্ন গ্রুপেরও সদস্য হতে পারে। তবে একবার যদি এসব গ্রুপ একত্রিত হতে পারে তবে সবাই মিলে একটি পরিবেশমুখী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।