বিনোদন ডেস্ক : ৩ ঘন্টার ফিল্মে যদি ৩০ বার গায়ের রোম খাড়া হয়ে যায়, তাহলে মনে হয় পরিচালক ফিল্ম নয় ইতিহাস তৈরী করেছে ।
ফিল্ম দেখার সময় দর্শকরা ভাবে পরিচালক ভারতীয় ইতিহাসকে কত কষ্ট করে অধ্যয়ন করেছে । যদি ঐতিহ্যতার কথা বলেন তাহলে বাহুবলী ভারতের শ্রেষ্ঠ ঐতিহ্যশালী ফিল্ম, যা “মুগল এ আজম” ফিল্মকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে ।
৩ ঘন্টার ফিল্ম দেখার সময় আপনারা ৩ সেকেন্ডও মনে হয় না যে পর্দা থেকে চোখ সরিয়েছেন । গত দু বছর ধরে সবচেয়ে চর্চিত বিষয় ছিল “কাটাপ্পা নে বাহুবলী কো কিঁউ মারা” যার উত্তর নিয়ে হাজির হয়েছিল “বাহুবলী ২” যে ফিল্ম দেখে দর্শকদের পর্দা থেকে এক মহুর্তের জন্য চোখ সরেনি ।
নায়ক প্রভাসের রনকৌশল দেখে সবার মুখে একটাই কথা বেরিয়েছে, বাহ, এটাই তো আমাদের আসল ইতিহাস । এমনই ছিল আমাদের সমুদ্রগুপ্ত, স্কন্দগুপ্ত, এমনই ছিল প্রতাপ, শিবা, এমনই ছিল বাজীরাও, শিবাজী । এক সঙ্গে ধনুকে চার চারটে তীর চালিয়ে বাহুবলী ও দেবসেনা যা সকলকে ধরাশায়ী করে দিত ।
কয়েক যুগ পর ভারতীয় সিনেমার পর্দায় সংস্কৃত বলা কোনো যোদ্ধাকে দেখলাম, কয়েক যুগ পর সিনেমার পর্দায় রক্ত দিয়ে রুদ্রাভিষেক করা কোনো যোদ্ধাকে দেখলাম, কয়েক যুগ পর সিনেমার পর্দায় পূন্যভূমি ভারতবর্ষকে দেখলাম ।
আপনি বিশ্বের সব সিনেমায় নারী সৌন্দর্য্য হয়তো দেখেছেন কিন্তু দেবসেনা চরিত্রে অভিনেত্রী অনুস্কা দেখুন, আপনি নিজেই বলে উঠবেন এমন নারী রুপ কোনো দিন দেখিনি ।
নারীদের যৌনতা দেখিয়ে বাজার করা ফিল্ম নির্মাতাদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে এই প্রথম নারী শক্তি নিজস্ব গরিমা দেখিয়েছে এই বাহুবলী ফিল্মে । বাহুবলীই একমাত্র ফিল্ম যাতে প্রেমের দৃশ্যে নারীদের খেলনা হিসাবে দেখানো হয়নি, বাহুবলী একমাত্র ফিল্ম যাতে নারীদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ন্যায় পেয়েছে ।
দেবসেনাকে তার মর্যাদা এবং বচনের সহিত মহিস্পতি নিয়ে আসার সময় বাহুবলী যখন জলে নেমে নিজের বাহু এবং কাঁধে করে রাস্তা তৈরী করছিল এবং তার কাঁধে চড়ে যখন দেবসেনা নৌকাতে চাপছিল তখন বাহুবলীকে একজন পূর্ন পুরুষ লাগছিল এবং দর্শকরা নিজেরা পুরুষ হয়ে গর্ববোধ করছিল ।
প্রভাসের রুপে পরিচালক এমন এক নায়ক পেয়েছিল যা সত্যিই একজন হিন্দুবীর নিপুন যোদ্ধা এবং রাজামৌলী নিজেকে প্রমান করতে পেরেছেন যে সত্যিই ভারতবর্ষের সর্বকালের সেরা পরিচালক । অন্যদিকে অনুস্কা নিজেকে সর্বকালের সেরা রানী হিসাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে ।
বাহুবলীর সঙ্গীত একটু দুর্বল মানের যদিও বাহুবলী সিনেমাতে গান গাওয়ার মত যোগ্যতা কিংবা গান লেখার মত যোগ্যতা বর্তমানে আমাদের দেশের কোনো সঙ্গীত শিল্পীর নেই বললেই চলে, হয়তো তুলসীদাস বেঁচে থাকলে সেটা সম্ভব হতো ।
বাহুবলী কাছে একটা সিনেমা নয় বাহুবলী হল ভারতের হিন্দু সংস্কৃতির ঐতিহ্য, হিন্দু ধর্মের নিশান, হিন্দুদের ইতিহাসের গৌরব গাঁথা….
এই একটা সিনেমা যেটা দেখে প্রেম ভালোবাসা নয়, ধর্মের জন্য যুদ্ধ করা , হিন্দুদের আসল ইতিহাস -ঐতিহ্যের কথা জানার সুযোগ আছে