ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী ১১৯৯ সালে দক্ষিন বিহার অঞ্চলে ওদাত্তপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও বিখ্যাত নালান্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আক্রমন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় তিন হাজার উচ্চতম ডিগ্রিধারী শিক্ষক এবং প্রায় বিশ হাজার ছাত্র ছাত্রীকে হত্যা করেন ।
শামস উদ্দিন ইলিয়াস শাহ ১৩৪৬ খৃষ্টাব্দে নেপাল আক্রমন করে স্বয়ম্ভুনাথ স্তুপ ও শাক্য মুনির পবিত্র ধ্বজা ভস্মীভুত করেন।মোহাম্মদ শাহ (১ম, ১৩৫৮-৭৭) বিজয়নগর সাম্রাজ্য অতর্কিতে আক্রমন করে সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে চার লক্ষ হিন্দুর প্রাণনাশ করেছিলেন এবং বিজয়নগর সাম্রাজ্য লন্ডভন্ড করেন। এমন হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয়টি আর নেই ।
তাজ উদ্দিন ফিরোজ শাহ বিজয়নগর সাম্রাজ্য লুন্ঠন করেন এবং একজন রাজকন্যাকে নিজ হারেমের জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন। বাহমনী সুলতান ফিরোজ শাহ বিজয়নগরের রাজা দেব রায়কে পরাজিত করেন এবং রাজ কন্যাকে তার সঙ্গে বিয়ে দিতে বাধ্য করেন। এই অপমানে বিজয়নগরের জনগন প্রতিশোধের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়। ফলে ফিরোজশাহ পুনরায় আক্রমন করে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। ফিরোজ শাহ এই পরাজয়ের গ্লানি সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুর মুখে পতিত হন।
১৫৫৬ খৃষ্টাব্দে দাক্ষিনাত্যের সকল সুলতানী বাহিনী এক সঙ্গে বিজয়নগর আক্রমন করেন। ফলে সায়ানাচার্যের স্বপ্নের বিজয়নগরের গৌরবসূর্য তালিকোটার প্রান্তরে চিরতরে অস্তমিত হল। বিজয়ী মুসলমান সৈন্য বিজয়নগরে প্রবেশ করে দীর্ঘ পাচ মাস ধরে অবাধ লুন্ঠন চালালো। বুরহান-ই-মসির ও ফিরিস্তির বর্ণনা থেকে জানা যায়, কল্পনাতীত পরিমান মনি মুক্তা, ধন-দৌলত, অসংখ্য হাতি, ঘোড়া, উট, দাস-দাসী বিজয়ী সৈন্যগন কর্তৃক লুন্ঠিত হয়েছিল। বিজয়ী মুসলমান কেবলমাত্র মুল্যবান সামগ্রী লুন্ঠন করেই ক্ষান্ত ছিলেন না, বিজয়নগরকে তারা বিরাট ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে বিজয়নগরের ন্যায় সমৃদ্ধ নগরীর এইরূপ আকস্মিক ধ্বংস্তুপে পরিনত হওয়ার দ্ষ্টান্ত বিরল। নগরের যাবতীয় মন্দির, প্রাসাদ ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেও পরাজিতের প্রতি হিংসাপরণাতার অবসান হল না। অবশেষে লক্ষ লক্ষ হিন্দু নর-নারী এবং শিশু বৃদ্ধেরর রক্তে বিজয়নগরের ধুলি রঞ্জিত করে তারা লুন্ঠন যজ্ঞে পূর্ণাহতি দিল ।