পুজা শুরু হতে আর মাত্র বাকী পাঁচ দিন৷ আবহাওয়া দপ্তরের হিসেব বলছে দুর্গাপুজার আবহাওয়ার পরিবেশ থাকবে প্রতিকূল৷ আর তাই শুনে মুখ গোমড়া সকলেরই৷

মজার ব্যপারা হল দেবী দুর্গার বাহন সিংহ৷ তাহলে ঘোড়ায় আগমন, দোলায় গমন, গজে গমনাগমের মতো প্রশ্নগুলি আসে কী করে!  দেবীদুর্গার যাতায়াতের সঙ্গে প্রকৄতির যোগ প্রবল।

শাস্ত্রে আছে, দেবীর গমনাগমন যদি রবিবার বা সোমবার হয় তাহলে তাঁর যানবাহন হয় গজ৷ আবার দেবীর গমনাগম শনিবার বা মঙ্গলবার হলে তিনি চড়েন ঘোটকে৷

কিন্তু বৄহস্পতিবার বা শুক্রবার যদি দেবীর গমনাগমন হয় তাহলে তিনি দোলায় যাতায়াত করেন৷ আর বুধবার হলে তাঁর যাতায়াতের যানবাহন হয় নৌকা৷

দেবী যদি গজে গমনাগমন করেন তাহলে পৄথিবীতে জলের সমতা বজায় থাকে এবং শস্য ফলন ভালো হয়৷ সুখ সমৄদ্ধিতে পরিপূর্ণ থাকে মর্ত্যভূমি৷

হাতি হল অন্নপূর্ণা এবং দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার বাহন৷ অন্নপূর্ণার আশির্বাদে শস্যশ্যামলা হয়ে ওঠে এই বসুন্ধরা। বিশ্বকর্মার বাহন যেমন গজ তেমনই বিশ্বকর্মা হলেন শিল্পের দেবতা৷ তাই গজে গমনাগমনের ফলে পৄথিবীতে কৄষিকাজের পাশাপাশি শিল্পের উন্নতি ও প্রসার হয়৷

দেবী দুর্গা যদি দোলায় চড়ে গমনাগমন করেন তার ফল মর্ত্যে বহু মৄত্যু৷ এই বহু মৄত্যু হতে পারে প্রাকৄতিক দুর্যোগের কারণে কিংবা যুদ্ধ হানাহানির কারণে৷

দোলা হল পালকির মতো একটি যান৷ যার স্থিরতা কম, সদা দলুল্যমান, অল্পে ভঙ্গুর এবং অনেক সময়ই বিপদের কারণ৷ তাই দেবী দুর্গার দোলায় গমনাগমনই মর্ত্যভূমির স্থিরতা ব্যাহত হতেই পারে৷

দেবী দুর্গার গমনাগমন ঘোটকে হলে চরম বিশৄঙ্খলা এবং ক্ষয়ক্ষতি দেখা দেয় মর্ত্যভূমিতে৷ ঘোটক অত্যন্ত ক্ষিপ্রগামী, বুদ্ধিমান এবং প্রভুভক্ত৷ তবুও কখনও কখনও তার আচরণে উদভ্রান্ত ভাবও লক্ষ্য করা যায়৷ এমন সময় ঘোড়া ছুটতে থাকে লক্ষ্মীর বিপরীতে৷

ঘোড়ার এমন স্বভাবের প্রভাবই মর্ত্যের উপর পড়ে যখন দেবী দুর্গা গমনাগমন করেন ঘোটকে৷ এ ছাড়া দেখা যাচ্ছে দেবী ঘোটকে গমনাগমন করেন মঙ্গলবার বা শনিবার ৷ মঙ্গল গ্রহের সেনাপতি, তেজস্বী ও বীরদর্পী৷ আর শনি হল অনিষ্টকারী৷

দেবী দুর্গা নৌকায় গমনাগমন করলে মর্ত্যভূমিতে শস্য খুব ভালো হয়ে থাকে৷ কিন্তু, অতি বৄষ্টি বা বন্যার আশঙ্কাও থাকে৷ এক কথায় – জল বৄদ্ধির প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে মর্ত্যভূমিতে৷

দেবী দুর্গা বুধবার যাতায়াত করলেই তার যানবাহন হয় নৌকা ৷ বুধবার হল সৌম্যবার৷ খুব শান্ত সৌম্য, শান্তিপ্রিয় হলেও বালক স্বভাবের৷ তাই বুধ সরল কিন্তু চঞ্চল মানসিকতা সম্পন্ন৷

পঞ্জিকাতে লেখা আছে এবছর দেবী আসছেন ঘোড়ায়। পঞ্জিকা মতে, এর ফল ‘ছত্রভঙ্গ’। দশমীর দিন এবার মা দূর্গার গমন হচ্ছে দোলায়। পঞ্জিকা অনুযায়ী এভাবে গমনের ফল ‘মড়ক’।