রোকসানা আমিন
বাল্যবিবাহ বন্ধ করার জন্য কঠোর আইন এবং সরকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বিভিন্ন কারনে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা যাচ্ছে না।পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলায় বলদিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি বিদ্যালয়ে খোজ নিয়ে দেখা গেছে —জে এস সি পরিায় কিছু ছাত্রী অনুপস্থিত। তাদের অনুপস্থিতির অন্যতম কারন বাল্যবিবাহ। জিলবাড়ি আবদুল ওহাবেব মেয়ে কুলসুম এবার জে এস সি পরিা দিতে পারেনি। এ বিষয়ে বলদিয়া মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক জনাব মো: মোরশেদুল হক জানান, পরিার বেশ কিছুদিন আগে থেকে কুলসুম স্কুলে আসছে না। তিনি খোজ নিয়ে জানতে পারেন, কুলসুমের বিয়ে হয়ে গেছে। এদিকে কুলসুমের প্রতিবেশিরাও কিছু জানেন না। কারন অভিভাবকরা কুলসুমকে তার নানীর বাড়ি নিয়ে বিয়ে দিয়েছেন।এদিকে রাজাবাড়ি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক জনাব শফিকুল আলম এর সাথে কথা বলে জানা গেছে এবার তিনজন ছাত্রী জে এস সি পরিা দিতে আসেনি। এদের মধ্যে রাজাবাড়ি গ্রামের রফিক মিয়ার মেয়ে তানজিলা এবং মো: ফারুক হোসেনের মেয়ে সাবিনা আক্তার – এই দু’জনের বিয়ে হয়ে গেছে। এলাকার অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে যে, তাদের অধিকাংশই মনে করেন ১২/১৩ বছর বয়স হলেই মেয়েরা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়। মূলতঃ এই মধ্যযুগীয় বিশ্বাসের কারনেই এখনো বাল্যবিবাহ চলছে। বলদিয়া ইউনিয়ন ও তার আশেপাশের এলাকায় খোজ নিয়ে জানা গেছে সরকারি আইনের কঠোরতা, প্রশাসন ও পুলিশের তৎপরতার কারনে বেশি ভাগ বাল্যবিবাহ মেয়ের বাড়ি থেকে দূরে— অন্য এলাকায় সংঘটিত হয়। বিয়ের আগে মেয়ের বয়স বাড়িয়ে নতুন জন্ম নিবন্ধন তৈরী করা হয়। যে কারনে তাৎণিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহন সম্ভব হয় না। অনেক অভিভাবক মেয়ের নিরাপত্তার অভাব বোধ করার কারনে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বটা মেয়ের শ্বশুর বাড়ির ওপর চাপিয়ে দিয়ে ভারমুক্ত হতে চান। দারিদ্র্যের কারনেও মেয়ের ভরন-পোষণের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি পাওয়ার জন্য অনেকে তাড়াতাড়ি মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন।