২রা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ সকাল ৮:১৮
ব্রেকিং নিউজঃ

ছেঁউড়িয়ায় লালন উৎসব শুরু হচ্ছে সোমবার

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ রবিবার, অক্টোবর ১৫, ২০১৭,
  • 615 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১২৭তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেঁউড়িয়ার আখড়ায় সোমবার (১৬ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণ উৎসব। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় লালন একাডেমি ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন রয়েছে এর আয়োজনে। এরই মধ্যে অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ভক্ত-অনুসারীরা জায়গা করে নিতে শুরু করেছেন আখড়ায়। লালন একাডেমি কর্তৃপক্ষও মেলা প্রাঙ্গণকে সাজিয়েছে নতুন রূপে।
জানা গেছে, তিন দিনব্যাপী এ উৎসবে থাকছে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলা। সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ উদ্বোধন করবেন এই আয়োজন। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যন হাজী রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
তিন দিনের আয়োজনের দ্বিতীয় দিন প্রধান অতিথি থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, বিশেষ অতিথি থাকবেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ। তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া।
লালন শাহের আখড়া বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সাঁইজির তিরোধান দিবস উপলক্ষে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চলে এসেছেন লালন মাজার প্রাঙ্গণে। তাদের মুখে মুখে সাঁইজির বাণী।
লালন মাজারের প্রধান খাদেম ফকির মহম্মদ আলী শাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক সাধক শিরোমনি লালন সাঁইজি মৃত্যুর সময় শিষ্যদের বলেছিলেন, ‘আমি কোনও ধর্মের লোক নই, থাকার ঘরেই আমার সমাধি হবে, আর সে সময় আমার গান চলবে।’ এরপর থেকে প্রথমে লালন অনুসারীরা, পরে আখড়া কমিটি ও লালন একাডেমি এই উৎসব পালন করে আসছে।’’ জাত-পাত ভুলে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত-অনুসারী এরই মধ্যে আখড়া বাড়ি ও আশপাশের এলাকায় আসতে শুরু করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই উৎসবে বাউল-সাধক, ভক্ত-আশেকানদের আখড়া বাড়িতে আসতে কোনও আমন্ত্রণ লাগে না; আবার প্রথার বাইরেও তারা কিছু করেন না।’
এদিকে, আখড়া প্রাঙ্গণের মঞ্চ এরই মধ্যে প্রস্তুত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য। আর মেলা চত্বরসহ কালিগঙ্গা নদীর তীর এলাকায় হরেক রকমের পণ্যের পসরা বসাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তবে গোটা আয়োজনের জন্য পুলিশ-প্রশাসও সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম মেহেদী হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উৎসব নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুরো এলাকা আমরা সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসবো। কালী নদীতে থাকবে নৌ টহল। গোয়েন্দা তৎপরতা ও শহরকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার থাকবে মেলার সময়।’
লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. জহির রায়হান বলেন, ‘ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস উপলক্ষে এখানে আসা দেশ-বিদেশের লালনপ্রেমী অনুসারীদের থাকা-খাওয়াসহ তাদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানের গোটা এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে। আশা করি, এ বছর মেলায় কোনও ধরনের সমস্যা হবে না।’
উল্লেখ্য, বাংলা ১২৯৭ সালের ১ কার্তিক প্রয়াণ হয় বাউল সম্রাট লালন শাহের।এরপর থেকেই কালিগঙ্গা নদীর তীরে পালিত হয়ে আসছে লালন স্মরণোৎসব। অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রতিবছর লালনের আখড়া বাড়ি কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় সমাগম হয় হাজার হাজার মানুষের। এ উৎসবকে ঘিরে দেশ-বিদেশ থেকে দলে দলে মানুষ ছুটে আসেন লালনের আখড়ায়। কয়েক দিন আগ থেকেই লালন ভক্ত ও বাউলরা আখড়াবাড়িতে হাজির হন।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »