ভগবানের সঙ্গে আধ্যাত্মিক যোগ তৈরির জন্যই প্রাচীনকালে তৈরি করা হয়েছিল মন্দিরগুলি। কোনও কোনও মন্দিরে প্রবেশের একটি বিশেষ সময় আছে। আবার কোথাও সারাদিনও খোলা থাকে মন্দির। তবে ছত্তিসগড়ের এক মন্দিরে রয়েছে এক অদ্ভুত রীতি। বছরে মাত্র একবার খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের গর্ভগৃহ। তাও আবার মাত্র পাঁচ ঘণ্টার জন্য।
প্রত্যেক বছর ওই বিশেষ দিনে দেবদর্শনের জন্য মন্দিরে যান দেশের বহু মানুষ। সাধারণত ভোর চারটে থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত খোলা হয় ওই গর্ভগৃহ। এই মন্দিরের নাম ‘নিরাই মাতা’। ছত্তিসগড় থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে একটি পাহাড়ের মাথায় অবস্থিত এটি। পেরি নদীর তীরে রয়েছে এই মন্দির।
যেহেতু এই মন্দিরে একজন দেবী পূজিত হন, তাই অনেকেই মনে করেন এখানে দেবীকে সন্তুষ্ট করতে দিতে হবে সিঁদুর, আবির, কুমকুম এসব। কিন্তু তা নয়, এখানে ভগবানকে নিবেদন করতে হয় নারকেল ও ধূপ। প্রত্যেক বছর চৈত্র নবরাত্রির দিন খুলে দেওয়া হয় এই মন্দির। সেদিনই জ্বলে ওঠে আলো। এক স্বর্গীয় রহস্যের কারণেই এই দেবীর প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা অসীম।
শোনা যায়, এই চৈত্র নবরাত্রির দিন দেবীর ওই পাহাড়ে জ্বলে ওঠে আগুন। কিভাবে ওই আগুন জ্বলে ওঠে তা আজও অজানা। গ্রামবাসীরা বলেন, নিরাই দেবীর এই আগুন নাকি ন’দিন ধরে জ্বলতে থাকে ওই মোহেড়া পাহাড়ে। সেখানে এক সাধু ওই দেবীর পুজো করেন ভক্তিভরে। পাহাড়ে বা মন্দিরে কোনও দেবীর মূর্তি নেই। তা সত্ত্বেও দেবীর পুজো করা হয়, সবাই মানেন নিরাই মাতাকে। বিশ্বাসের সঙ্গে পুজো করেন।
বলা হয়, ২০০ বছর আগে মালহুজার জয়রাম গিরি গোস্বামী নামে এক গ্রামবাসী ছ’একর জমি দান করেছিলেন নিরাই মাতার পুজোর জন্য। সেখানেই তৈরি হয়েছে মন্দির। নিরাই মাতার পুজো করলে সবার মনস্কামনা পূর্ণ হয়, এমনটাই মনে করেন তিনি। গ্রামবাসীদেরকে সব ভয় ও কষ্ট থেকে দূরে রাখেন নিরাই মাতা।
![]() |