এক হিন্দু গৃহবধুর দু’পা গাছের সঙ্গে ও পিঠমোড়া দিয়ে দু’ হাত বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা চালানোর সময় গ্রেপ্তারকৃত দেলোয়ারকে রক্ষায় কয়েক লাখ টাকার মিশন নিয়ে জামায়াত বিএনপির নেতারা মাঠে নেমেছে।
ওই গৃহবধুর পরিবারের সদস্যদেরকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। নির্যাতিতের স্বামীসহ চারটি পরিবারের বিরুদ্ধে জামায়ত ও বিএনপি সমর্থকরা এক হয়ে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ১০নং আগড়দাঁড়ি ইউনিয়নের চুপড়িয়া গ্রামের এক ভ্যানচালকের কাকা গৌরহরি দাস ১৯৮৮ সালে একই গ্রামের মাহাবুবর রহমানের কাছে বাড়ি ও জমি বিক্রি করে ভারতে চলে যান। এরপর থেকেই তাদের পাঁচ ভাইকে জমি তাদের কাছে বিক্রি করে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য মাহাবুবর রহমান ও তার ছেলেরা বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছিল। এরই অংশ হিসেবে ২০১০ সালে ওই ভ্যান চালকের ভাই মুদি ব্যবসায়ির স্ত্রীকে মারপিট করে মাহাবুবর রহমানের ছেলে দেলোয়ার। বিষয়টি তৎকালিন ইউপি সদস্য দেলোয়ারের শ্বশুরকে অবহিত করা হলে তিনি জামাতাকে ডেকে এনে ক্ষমা চাইয়ে নেন। গত পহেলা অক্টোবর মাহাবুবর রহমানের জমিতে একটি শিয়াল মারা যায়। ওই মরা শিয়ালটি মাহাবুবর রহমানের ছেলে দেলোয়ার হোসেন(২৪) তাদের বাড়ির পাশের জমির সীমানায় ফেলে যায়। পঁচা শিয়ালের গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি ও তার স্ত্রী প্রতিবাদ করায় জামায়াতের কর্মী দেলোয়ার ও তার ভাই গোলাম সরোয়ার তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়।
৬ অক্টোবর বৃহষ্পতিবার লক্ষীপুজার রাতে দেলোয়ার তাদের বসত ঘরের পিছনের জানালার ভেঙে ঘরের মধ্যে একটি বাল্ব খুলে নেয়। জানতে পেরে চিৎকারদিলে দেলোয়ার পালিয়ে যায়। এনিয়ে তাদের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। গত শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে তিনি বাড়ির পাশের মাঠে ছাগলের জন্য ঘাস কাটতে যান ভ্যান চালকের স্ত্রী। ঘাস কাটার একপর্যায়ে সেখানে দেলোয়ারসহ দু’জন পিছন দিক থেকে ওই গৃহবধুকে কাপড় দিয়ে মুখ চেপে ধরে। কোমরের নীচের পরিহিত কাপড় ছিঁড়ে ফেলে দু’ পা একটি মেহগনি গাছের সঙ্গে ও দু’ হাত বেঁধে ফেলে। এ সময় তার মাথার চুলের কিছু অংশ কেটে দেওয়া হয়। পরে দেলোয়ার তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তার পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ নির্যাতিতার স্বামী ভ্যানচালক বাদি হয়ে দেলোয়ারসহ তিন জনের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার রাতেই থানায় মামলা করেন। গ্রেপ্তারকৃত দেলোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানালে তা না’মঞ্জুর হয়। মামলার বাদির বড় ভাই অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের জামায়াত ও বিএনপির নেতাকর্মীরা সব এক হয়ে গেছে।
তাদেরকে নানাভাবে হুমকি থামকি দেওয়া হচ্ছে। চুপড়িয়া গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান, একই গ্রামের নারী নেত্রী মরিয়ম মান্নান, আবু বক্কর ও সাইফুল্ল¬ বলছে মিথ্যা ঘটনায় মামলা করা হয়েছে কেন। এর ফল ভাল হবে না। এ ছাড়া তাদেরকে এক প্রকার এক ঘরে করে রাখা হয়েছে। বাড়িতে সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী বা অন্য কোন লোক এলে সঙ্গে সঙ্গে হাজির হচ্ছে একটি বিশেষ চক্রের লোকজন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সরকার জানান, এ ধরনের অভিযোগ তিনি শুনছেন। অজ্ঞাতনামা আসামিদেরকে সনাক্ত করার চেষ্টা করা হচেছ। ডাক্তারি সনদ পেলে আদালতে তাড়াতাড়ি পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।