দেশের সবচেয়ে দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকা উত্তরবঙ্গ। সবচেয়ে বেশি গরিব মানুষ থাকে রংপুর বিভাগে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ খানার আয় ও ব্যয় নির্ধারণ জরিপ ২০১৬-তে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, দারিদ্র্যর হার সবচেয়ে বেশি, এমন ১০টি জেলার মধ্যে ৫ টিই রংপুর বিভাগের। কুড়িগ্রাম ছাড়া এই তালিকায় আছে রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট। এর মধ্যে দারিদ্র্যের হার দিনাজপুরে ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ, গাইবান্ধায় ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ, রংপুরে ৪৩ দশমিক ৮ শতাংশ ও লালমনিরহাটে ৪২ শতাংশ। শীর্ষ দশের তালিকায় দেখা গেছে, দেশের আরেকটি দারিদ্র্যপ্রবণ পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলা আছে। এই তালিকায় থাকা অন্য তিনটি জেলা হলো জামালপুর, কিশোরগঞ্জ ও মাগুরা।
জরিপ অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো আছেন নারায়ণগঞ্জের মানুষ। এই জেলার প্রতি ১০০ জনে গড়ে ২ দশমিক ৬ জন মানুষ গরিব। বাকিরা সবাই দারিদ্র্যসীমার ওপরে বাস করেন। দারিদ্র্য কম এমন শীর্ষ ১০টি জেলার ৭টিই ঢাকা বিভাগের। নারায়ণগঞ্জ ছাড়া ঢাকা বিভাগের বাকি ছয়টি জেলার মধ্যে দারিদ্র্যের হার মুন্সিগঞ্জে ৩ দশমিক ১ শতাংশ, মাদারীপুরে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, গাজীপুরে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ, ফরিদপুরে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ, ঢাকায় ১০ শতাংশ ও নরসিংদীতে সাড়ে ১০ শতাংশ। শীর্ষ দশের তালিকায় থাকা অন্য তিনটি জেলার মধ্যে দারিদ্র্যের হার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ দশমিক ৩ শতাংশ, মৌলভীবাজারে ১১ শতাংশ ও সিলেটে ১৩ শতাংশ।
জরিপের প্রকল্প পরিচালক দীপঙ্কর রায় বলেন, ‘এবারই প্রথমবারের মতো জেলাওয়ারি দারিদ্র্য পরিস্থিতি কেমন তা তুলে ধরা হয়েছে। আমরা দেখতে চেয়েছি, আঞ্চলিক পর্যায়ে দারিদ্র্য বা দারিদ্র্য পকেট আছে কি না। দেখা গেছে, কিছু অঞ্চল বেশি দরিদ্র।’ এই জরিপে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেশি দরিদ্র অঞ্চলগুলোয় সরকার নীতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিতে পারে।
খানার আয় ও ব্যয় নির্ধারণ জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী, গত ছয় বছরে সার্বিক দারিদ্র্যের হার সাড়ে ৩১ শতাংশ থেকে কমে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে। অতি দারিদ্র্যের হারও কমেছে। ২০১৬ সালে অতি দারিদ্র্যের হার ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। বিবিএসের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ২০ লাখ। সেই হিসাবে, দেশে ৩ কোটি ৯৩ লাখ দরিদ্র মানুষ আছে। হতদরিদ্রের সংখ্যা ২ কোটি ৮ লাখ।