পীরগঞ্জে গণধর্ষণের শিকার এক হিন্দু বিধবা নারীকে মারাত্মক আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যৌন নির্যাতনে বাধা দেয়ায় ধর্ষকরা ভিকটিমকে বেধড়ক মারধরের পর তার চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা চালিয়েছে। উপজেলার চতরাহাটে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ১ ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে। বাকি ৪ আসামি পলাতক রয়েছে।
মামলা, এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ৮ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় চতরা ইউনিয়নের আদিবাসী পল্লী টিকরাপাড়া গ্রামের গণধর্ষণের শিকার ওই ভিকটিমের (২৮) স্বামী মারা যান। তিনি একমাত্র ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। সেখানে নিজেই আয়-রোজগার করে সংসারের পাশাপাশি তার ছেলেকে ২য় শ্রেণীতে পড়াচ্ছেন। ১ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে ভিকটিম পার্শ্ববর্তী চতরাহাট থেকে বাজার করে বাড়ি ফেরার সময় ৫ লম্পট তার পথরোধ করে মুখ চেপে চতরা বালিকা বিদ্যালয়ের পেছনে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে লম্পটরা তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি করায় মারধরের পর তার বাম চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা করে। পরে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের পর সেখানে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায় ধর্ষকরা। পরে জ্ঞান ফিরলে রাতে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। ঘটনার পর স্থানীয় প্রভাবশালী চিহ্নিত ধর্ষকরা প্রাণনাশের হুমকি দেয়ায় আইনের আশ্রয় নিতে সাহস পাননি তিনি। এমনকি চিকিৎসাও নিতে পারেননি।
অবশেষে ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার অসুস্থ ভিকটিম পীরগঞ্জ থানায় এসে এজাহার দিতে চাইলে পুলিশ তাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। বুধবার তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তদন্তের পর ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে মামলা নেয় থানা পুলিশ। মামলায় গোবিন্দপাড়ার বেলাল হোসেন (৩৫), চতরা হাজীপাড়ার আবদুস সাত্তার দুদু মিয়া, কাটাদুয়ারের শাহারুল (৩২), ফিরোজ খান (৩০) এবং হালিম মণ্ডলকে (৩৮) আসামি করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স) আবদুস শুকুর মিয়া বলেন, গণধর্ষণের শিকার ওই বিধবার মামলা রেকর্ডের পর বৃহস্পতিবার রাতেই ২নং আসামি আবদুস সাত্তার দুদু মিয়াকে চতরা বাজার থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।