২২শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ রাত ২:২৯

ভারতে ভোটের প্রচারে আরো এক বাংলাদেশি অভিনেতা

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০১৯,
  • 301 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

পশ্চিমবঙ্গের রায়গঞ্জে তৃণমূলের প্রচারে বাংলাদেশের নাগরিক নায়ক ফেরদৌসকে নিয়ে হুলস্থূল পড়ে গিয়েছে ভারতের রাজনৈতিক মহলে। এর মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের হয়ে আরো এক বাংলাদেশি নাগরিকের প্রচার।

তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের হয়ে প্রচারে দেখা গিয়েছে গাজি আবদুন নূরকে। ‘করুণাময়ী রানি রাসমণি’ ধারাবাহিকে রাজা রাজ চন্দ্রের ভূমিকায় অভিনয় করে জনপ্রিয় মুখ নুর। ধারাবাহিকে তাঁর চরিত্রটির মৃত্যু হয়েছে কয়েকদিন আগেই।

রাম নবমীতে খোলকরতাল নিয়ে বেড়িয়েছিলেন মদন মিত্র। ভবানীপুর এলাকায় তাঁকে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের মিছিলে। ওই মিছিলেই অংশ নিয়েছিলেন নূর।

শুধু তাই নয়, দমদমে সৌগত রায়ের প্রচারেও দেখা গিয়েছে নূরকে। একটি হুডখোলা গাড়িতে নূরকে সঙ্গে নিয়ে ভোট চেয়েছেন মদন মিত্র।

বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রচার নিয়ে ইতিমধ্যেই হয়েছে জলঘোলা। ফেরদৌসের প্রচার নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। নির্বাচন কমিশনের কাছে নালিশ করেছে বিজেপি।

তৃণমূল নেতা মদন মিত্র সোমবারই সাফাই দেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধে সময় আমরা সাহায্য করেছিলাম। ফেরদৌসকে প্রচারে এনে আমরা ভুল কিছু করিনি। দেশবিরোধী, বেআইনি ও আদর্শআচরণবিধি লঙ্ঘন করে কিছু করবে না তৃণমূল কংগ্রেস। কমিশন আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে বিজেপিকে ছাড়া চলবে না। রাম নবমী অস্ত্র নিয়ে মিছিল করেছেন বিজেপি প্রার্থীরা’।

জানা গিয়েছে, শ্যুটিং করার জন্য ভিসা পেয়েছিলেন ফেরদৌস ও আবদুন নূর। ভারতের কাজের অনুমোদনপত্র পেয়ে কীভাবে রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রচারে নামতে পারেন তাঁরা, উঠেছে সেই প্রশ্ন। বিষয়টি দেখছে বিদেশি আঞ্চলিক পঞ্জিকরণ দফতর(এফআরআরও)। সংশ্লিষ্ট জেলা সুপারদেরও জবাবদিহি করতে হবে বলে জানা গিয়েছে।

ফেরদৌসের কাছে কৈফিয়ত চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ফেরদৌসকে ডেকে পাঠানো হয় কলকাতায় স্থিত বাংলাদেশের উপদূতাবাসে।  নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরে যেতে হবে অভিনেতাকে। নির্বাচন মেটার পর ভারতে আসতে পারবেন তিনি।

আর নূরও ইতিমধ্যেই ফোন পেয়েছেন কলকাতায় বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে। তিনি প্রচার করছিলেন কিনা, জানতে চাওয়া হয়েছে তাঁর কাছে।

প্রসঙ্গত,  অভিযোগ প্রমাণ হলে ফেরদৌস ও নূর উভয়েরই ৫বছরের জেল ও জরিমানা হতে পারে।

মঙ্গলবার এই ইস্যু সামনে আসার পর জনপ্রিয় ‘করুণাময়ী রানি রাসমণি’ সিরিয়ালের অভিনেতা নূর ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে জানিয়েছেন, মদন মিত্র তাঁর দাদার মত। তাঁর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। প্রচারের কথাও অস্বীকার করেছেন তিনি।

নূর জানান, তাঁর মা যখন অসুস্থ হয়েছে আইসিইউ-তে ভর্তি ছিলেন তখন মদন মিত্র অনেক সাহায্য করেছেন। তাঁর মা বাংলাদেশ থেকে মদন মিত্রের জন্য খাবারও পাঠান মাঝেমধ্যেই। দাদা-ভাইয়ের সম্পর্কের খাতিরেই দক্ষিণেশ্বরে এলে দেখা করে যান মদন মিত্রের সঙ্গে। সেদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মন্দির দর্শন করে ফেরার সময় দেখা করেন তৃণমূলের এই নেতার সঙ্গে।

কলকাতায় তাঁর নিজের গাড়ি না থাকায় তিনি মদন মিত্রের গাড়িতে ফিরছিলেন বলে জানিয়েছেন নূর। আর সেই গাড়ি থেকে নেহাতই অভিনেতা সুলভ হাত নেড়েছেন ভক্তদের উদ্দেশে। এতে কোনও রাজনৈতিক গন্ধ ছিল না বলেই তাঁর দাবি। এমনকি তিনি কোনও কথাও বলেননি, তাঁর সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থীও ছিল না, তাই এই ঘটনাকে ভোট প্রচার বলায় আপত্তি আছে তাঁর।

জনপ্রিয় ‘করুণাময়ী রানি রাসমণি’ সিরিয়ালে রাসমাণির স্বামী রাজচন্দ্রের ভূমিকায় বেশ জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছেন এই বাংলাদেশি অভিনেতা। ‘করুণাময়ী রানি রাসমণি’ সিরিয়ালের জন্য শুধু ভারতের বাংলা টিভি চ্যানেলের দর্শকদের কাছেই নয়, বাংলাদেশের টিভির দর্শকদের কাছেও এখন খুব পরিচিত গাজী আবদুন নূর। শুরুতেই জানালেন, তিনি বাংলাদেশের ছেলে। বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলায় দাদার বাড়ি আর নানার বাড়ি গোপালগঞ্জে। তাঁদের বাসা মোল্লারহাটে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশোনা করেছেন সেখানেই। কলকাতায় যান ২০১১ সালে।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »