নিউজ ডেস্ক:: সিরাজগঞ্জ শহরের রেলস্টেশন এলাকার ময়লারস্তুপে পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক বৃদ্ধা মাকে গত ২০ দিন আগে তার ছেলে মেয়েরা ফেলে রেখে যায়।গত রোববার দুপুরে স্থানীদের সহযোগিতায় পরিচয়হীন ওই বৃদ্ধা মায়ের ঠাঁই হয়েছে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুলন্নেসা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে।
শাহজাদপুর উপজেলার আগনুকালি গ্রামের মামুন বিশ্বাস বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে। মামুন বিশ্বাস বলেন, পক্ষাঘাতগ্রস্ত ওই বৃদ্ধা স্পষ্ট করে কথা বলতে পারেন না। তাই তার পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি স্টেশনের ভাসমান দোকানি হকারদের কাছ থেকে জেনেছেন, এই বৃদ্ধাকে তার সন্তানরাই ফেলে রেখে গেছেন।
পক্ষাঘাতে ওই নারীর ডান হাত, ডান পা, মুখের ডান অংশ অকেজো হয়েছে গেছে। সে জন্য তিনি স্পষ্ট করে কথা বলতে পারেন না। অতি কষ্টে গড়িয়ে গড়িয়ে স্টেশন এলাকায় চলাচল করতেন, কেউ কিছু খেতে দিলে খেতেন। না দিলে, না খেয়েই সেখানে পড়ে থাকতেন। দীর্ঘদিন গোসলহীন অবস্থায় কাপড়েই মলমূত্র ত্যাগ করতেন। ফলে তার সারা শরীরে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল। দুর্গন্ধে কেউ তার কাছে যেত না। মশা-মাছি ও পিঁপড়ার কামড় খেয়েই সেখানেই সে পড়ে ছিল।
রোববার সকালে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে প্রথমে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে গোসল করিয়ে নতুন পোশাক পড়াই। তারপর দুপুরের দিকে একটি সিএনজিতে করে তাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুলন্নেসা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফরিদুল ইসলাম বলেন, এখানে ভর্তির পর থেকে আমরা ওই বৃদ্ধাকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করছি।
হাসপাতালের সমাজসেবা কর্মকর্তা হাসান শরীফ বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যেসব ওষুধ প্রয়োজন সমাজসেবা বিভাগ থেকে তা সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া তার চিকিৎসার জন্য যাবতীয় খরচও বহন করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ওই মহিলা এখন আগের চেয়ে সুস্থ আছেন এবং এ হাসপাতালের ৫ তলায় মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। এলাকাবাসী এ ঘটনার সাথে জড়িত ছেলেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এলাকাবাসী জানায় ওই মহিলার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ওই মহিলা চলাফেরা করতে না পাড়ায় ময়লার মধ্য পড়ে থাকা অবস্থায় মাথায় আঘাত পান। আকাশের নিচে ও স্টেশনের শেডে আশ্রয় নিয়ে পড়ে ছিলেন তিনি।