৩১শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ রাত ৯:৫৭

বাঁচতে চাইলে , বাঁচাতে চাইলে প্রেসক্রিপশন ছাড়া এ্যান্টিবায়োটিককে না বলুন

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০১৯,
  • 361 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ
___________________________


শুধুমাত্র রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি-বিতরন-ব্যাবহার করা যাবেনা!
অতি সম্প্রতি হাইকোর্ট এমন একটি রায় দিয়েছে।

এ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্সির শেষপ্রান্তে এসেও হাইকোর্ট কর্তৃক এমন একটি রায় পাওয়া গেছে তাতেই আমরা খুশী, খুশী হওয়াটাই স্বাভাবিক কারন আমরা অল্পতেই খুশী হওয়া শিখে গেছি।

এদেশে চিকিৎসকদের অধিকার নিরাপত্তা আর সম্মান এই তিনটি বড়ই দুস্প্রাপ্য!
এই দুস্প্রাপ্যের বাজারে হাইকোর্টের এই রায়টি অবশ্যই খুশী হওয়ার মতো একটি ব্যাপার কারন এ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশন করার অধিকার যে শুধু রেজিস্টার্ড চিকিৎসকরাই সংরক্ষণ করে হাইকোর্টের এই রায়ের মাধ্যমে তা আবার প্রমানিত হয়েছে!

কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো চিকিৎসকদের অধিকার সংরক্ষনের এই ব্যাপারটি কোন সাধারন চিকিৎসক বা কোন চিকিৎসকনেতা বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয় কর্তৃক সংঘটিত হয়নি!

একজন সমাজসেবক ও স্বেচ্ছাসেবী ব্যারিস্টার সুমন আমাদের হয়ে কাজটি করে দিয়েছেন!
ব্যারিস্টার সুমনকে আমার ও আমাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

আরেকটা দুঃখের বিষয় হলো আইনের ফাক বলে একটা কথা আছে!
সেই ফাক গলে আবারো যে চিকিৎসক নামধারী কোয়াক বা স্যকমোরা ঢুকে পড়বে না তার কোন গ্যারান্টি নেই!

কারন আমাদের ‘স্বর্গীয়( 😛 ) বিএমডিসি’ স্যাকমোদেরকেও রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে এবং তারাও নিজেদেরকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়েই গ্রামে-গঞ্জে প্রাকটিস করে, এ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করে এবং সেটা বিএমডিসির গোচরেই করে!

তাছাড়া আজ সকালেই বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক প্রচারিত একটি লিফলেট নজরে এলো যেখানে বলা হয়েছে-

‘শুধুমাত্র রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যাবস্থাপত্র মোতাবেক এ্যান্টিবায়োটিক বিক্রয়, সেবন বা গ্রহন করতে হবে(বিশেষক্ষেত্রে কেবল সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী কর্তৃক সরবরাহকৃত এ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা যাবে)।’

প্রিয় পাঠক,
উপরের ব্রাকেটবন্ধী অংশটুকু খেয়াল করুন।
এটাও একটা ফাক।
এই ফাক গলেই সব স্যাকমো আর কোয়াকরা হুড়মুড়িয়ে ঢুকে যাবে, সাধারনক্ষেত্রগুলোই তখন ‘বিশেষক্ষেত্র’ হিসেবে বিবেচিত হবে।

সুতরাং দেশের মানুষের আইন ভাঙার এবং আইনের ফাক খুঁজার যে পূর্বাপর অভিজ্ঞতা আমাদের আছে তার আলোকে হাইকোর্টের এই রায়ে খুব বেশী আহ্লাদিত হতে পারিনি।
বরং আশঙ্কায় আছি যাহাই লাউ তাহাই না আবার কদু হয়ে যায়!

বিজ্ঞনী আইনস্টাইন একবার দুঃখ করে বলেছিলেন,
‘যদি কখনো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাঁধে তবে তার ভয়বহতা ও ধ্বংসলীলা এতোটাই অপরিমেয় হবে যে চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধ করার জন্য মানুষের হাতে লাঠি ছাড়া আর কোন অস্ত্র অবশেষ থাকবে না।’

চিকিৎসক নামধারী স্যাকমো কোয়াক আর হাতুরে কর্তৃক মোয়ামুড়কির মতো যত্রতত্র এ্যান্টিবায়োটিক ব্যাবহারের ফলে এখনই আমাদের অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে সর্বশেষ আবিস্কৃত সর্বসাম্প্রতিক উচ্চমাত্রার শক্তিশালী এ্যান্টিবায়োটিকটিও ইতিমধ্যেই রেজিটেন্ট হয়ে গেছে!

এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে জ্বরা ব্যাধি মোকাবেলার জন্য কোন অস্ত্রই আর আমরা পাবো না!

প্রিয় পাঠক ভয়াবহতাটা একবার ভেবে দেখুন।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »