এক লাখ টাকার বিপরীতে ছয় মাসে ৭৮ হাজার টাকা সুদ ও পাঁচ শতক জমি লিখে দিয়েও রক্ষা হয়নি। টাকা নেয়ার সময় জমা রাখা চেক ফেরত চেয়ে উল্টো নিপীড়নের শিকার হয়েছেন সুদগ্রহীতা সাবেক ইউপি সদস্য।
শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে।
নির্যাতনের শিকার কানন বালা ওই এলাকার সুনীল চন্দ্র দেবের স্ত্রী। তিনি দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। বানিয়াচং সদরের রায়েরপাড়ার চিহ্নিত সুদী কারবারি টেনু মিয়া ও তার স্ত্রী কানন বালাকে চুলের মুঠি ধরে টানাহেঁচড়াসহ পাশবিক নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
কানন বালা জানান, মেয়ের বিয়ে দেয়ার সময় পাশের গ্রামের সুদী কারবারি টেনু মিয়ার স্ত্রী দোলন বেগমের কাছ থেকে সুদের ওপর এক লাখ টাকা নেন। এ সময় জামিনস্বরূপ ব্যাংকের দুটি চেকের পাতাও দেন দোলন বেগমকে।
ছয় মাসে এক লাখ টাকার জন্য ৭৮ হাজার টাকা সুদ দেন। পরে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের বাড়ির পাঁচ শতক জমিও রেজিস্ট্রি করে দেন। রেজিস্ট্রি অফিসে চেকের পাতা ফেরত চাইলে দোলন বেগম বাড়িতে এসে দেবেন বলে জানান।
বাড়িতে এসেও চেক ফেরত না দিয়ে নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করেন। শনিবার বেলা ১১টার দিকে পুকুরপাড় থেকে কানন বালাকে জোরপূর্বক তুলে নেন দোলন ও তার স্বামী টেনু মিয়া।
দোলন ঘরের মধ্যে আটকে রেখে নির্যাতন চালান। এ সময় গলায় কিরিচ ধরে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে চাপ দেন। কানন বালা স্বাক্ষর না দেয়ায় তার দুহাত শিকলে বেঁধে চুল ধরে চড়-থাপ্পড় মেরে তালাবদ্ধ করে রাখেন।
কানন বালার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি পুলিশকে জানালে তারা এসে কানন বালাকে বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দোলন বেগম ও স্বামী পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত টেনু মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেন।
বানিয়াচং থানার ওসি মোহাম্মদ রাশেদ মোবারক বলেন, খবর পাওয়া মাত্র পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বুক্তভোগীকে উদ্ধার করেছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা পালিয়ে গেছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে।