৩১শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ দুপুর ১২:০২

লাখ লাখ জীব বিলীন হবে মানুষের কারণে!

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ মঙ্গলবার, মে ৭, ২০১৯,
  • 277 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

অন্য দশটি জীবের মতো মানুষও একটি। মানুষের শরীরতন্ত্রে নানা জটিল প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়। অন্যান্য প্রাণীদের বেলায়ও তাই। তবে অন্য প্রাণীর জীবনযাপন খানিকটা প্রকৃতির দয়ার উপর নির্ভরশীল, সেখানে মানুষ নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তা অন্যদের চেয়ে সাজানো গোছানো বানাতে পেরেছে। বিরূপ প্রকৃতির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ না করে লড়াই করতে শিখেছে। বিশ্বকে হাতের মুঠোয় আনতে পেরেছে। জীবের মধ্যে এই শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে মানুষ অহঙ্কার করতেই পারে।

কিন্তু অহঙ্কারের ভারে মানুষ ধীরে ধীরে যেন এটা ভুলে যেতে বসেছে, সে যদি একা হয়ে যায় তবে একদিন এই পৃথিবীতে বাস করা তার পক্ষেও সম্ভব হবে না। জলে, স্থলে কিংবা বাতাসে জীবজগতের যে বৈচিত্র্য আছে তা যদি ধ্বংস হয় তবে মানবজাতিও একদিন ধ্বংস হতে বাধ্য। অথচ মানুষ প্রকৃতির উপর যে ধরনের ‘নিপীড়ন’ চালাচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে লাখ লাখ প্রজাতির উদ্ভিত ও প্রাণী বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে। জাতিসংঘের একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল প্যারিস থেকে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, বর্তমান সময়ে যত দ্রুত জীবজগতের বিভিন্ন প্রজাতি একের পর এক বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তা অতীতে আর কখনো হয়নি। প্রযুক্তির উত্কর্ষতার কারণে আমরা নিজেদের সবকিছুর ঊর্ধ্বে মনে করছি। অথচ এমন এক দিন আসবে যখন প্রযুক্তি আমাদের রক্ষা করতে পারবে না। খাবার উত্পাদনের জন্য পর্যাপ্ত উদ্ভিদ থাকবে না, আমিষ পাওয়ার মতো পর্যাপ্ত প্রাণী থাকবে না, পরিবেশকে সুস্থ্য সুন্দর ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখার জন্য পর্যাপ্ত পোকামাকড় ও অণুজীব থাকবে না, এমনকি পান করার জন্য পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি হয়তো থাকবে না!

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মৌমাছি ও অন্যান্য কীট-পতঙ্গরা পরাগায়ন ঘটায়, তাই ফসল হয়। আমরা খাবার পাই। জঙ্গল ঝড় এবং বন্যার তীব্রতা কমিয়ে আমাদের প্রাণ বাঁচায়। এমন হাজারো শৃঙ্খলে জড়িয়ে আছে প্রাণ বৈচিত্র্য। অথচ মানুষ তার জ্ঞাতসারে কিংবা অজ্ঞাতসারে চলমান অসংখ্য জীবের খাদ্যশৃঙ্খল ভেঙে অনেক প্রজাতিকে নিশ্চিহ্নের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, একদিন যার শিকার হবে মানুষ নিজেও।

টানা তিন বছরের গবেষণায় প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। ১ হাজার ৮০০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে ১৫ হাজারের বেশি রেফারেন্স ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে সারাংশ আকারে ৪০টি পৃষ্ঠা লেখা হয়েছে বিশ্বের নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশে, যাদের হাতে বিশ্বের চাবিকাঠি। বলা হয়েছে, বিশ্বে আগেও জীববৈচিত্র্যে পরিবর্তন হতো। কিন্তু গত ৫০ বছর ধরে যা ঘটছে তাকে ‘এলার্মিং’ হিসেবে উল্লেখ করা যায়। ১৯৮০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে ১০ কোটি হেক্টর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বন ধ্বংস করা হয়েছে গোচারণ ভূমি, বাড়িঘর কিংবা কৃষিজমি তৈরির জন্য। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ২৫ শতাংশ প্রাণী এবং উদ্ভিদ অস্তিত্ব হারানোর ঝুঁকিতে। কীটপতঙ্গের অন্তত ১০ লাখ প্রজাতি এক দশকের মধ্যেই বিলুপ্ত হবে, ১ কোটি বছর আগের তুলনায় যা হাজার হাজার গুণ বেশি। এসব কারণে এখনই সতর্ক না হলে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বসবাসের অযোগ্য একটি পৃথিবী রেখে যাব আমরা।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »