বিখ্যাত আইনজীবী এবং বাংলাদেশের হিন্দু মহাজোটের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক পলাশ কুমার রায়কে জেলের মধ্যেই পুড়িয়ে মারার ঘটনায় আতঙ্কিত বাংলাদেশের হিন্দু সমাজ। বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলা কারাগারে এই ঘটনা ঘটেছে। জেলের টয়লেটের কাছে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কারা এই কাজ করলো? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। কারারক্ষীরা পলাশকে জখম অবস্থায় হাসপাতালে আনলে পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
আওয়ামী লীগ নেত্রী সম্পর্কে কটূক্তি করেছেন, এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যদিও পলাশ ও তার ঘনিষ্ঠরা দাবি করেন, এই অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা। যদিও এই মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তাকে জেল হাজতে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানেই গত ২৬ এপ্রিল তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কারারক্ষীরা চিৎকার শুনে ছুটে আসে। আগুন নিভিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে, তারপর নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে,কিন্তু শেষ রক্ষা করা যায়নি। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের তদন্ত দাবি করেছে বেশ কয়েকটি সংগঠন। শিলচরের বিমলাংশু রায় ফাউন্ডেশন- এর প্রধান বর্তমানে শিলচর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাজদীপ রায় এই ঘটনায় ভারতের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তার অভিযোগ, বাংলাদেশ সরকার এনিয়ে মুখে কুলুপ এটে বসে আছে। এই ঘটনায় যাতে দোষীরা শাস্তি পায় ,তারজন্য ভারত সরকারের উচিত ঢাকার ওপর চাপ সৃষ্টি করা। একই সঙ্গে তিনি এই ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, খুব দ্রুত এই ঘটনার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের হস্তক্ষেপ জরুরি। অসম ট্রিবিউন পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই দাবি তুলেছেন তিনি।
ঘটনার প্রতিবাদে গত কদিন ধরেই ঢাকায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন হিন্দু মহাজোট এবং অন্যান্য অন্যান্য হিন্দু সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, হিন্দুদের ওপর নিষ্ঠুরতা প্রতিদিন বেড়ে চলছে বাংলাদেশে। জেলখানা একটা নিরাপদ স্থান, সেখানে কাউকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, এমন ঘটনা দুনিয়াতে বিরল। এমনকি এই ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এটে বসে আছে সরকার। সৌজন্য দেখাতেও কেউ দুঃখ প্রকাশ করেনি। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করাতে এক মন্ত্রী দায়সারা ভাবে “দেখছি” বলেই স্থান ত্যাগ করেছেন। অথচ যাকে খুন করা হলো তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। একজন সৎ মানুষ। চিরকাল অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন । এমনকি তার কর্মজীবনের শুরুতে এক বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করার সময়, কোম্পানির গোপন অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করেছিলেন, সেই অন্যায়কে প্রকাশ্যেও এনেছিলেন তিনি। সেই সময়ও তাকে অপহরণ করে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল। সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার পলাশ রায়ের নেতৃত্বেই গড়ে উঠেছিল হিন্দু মহাজোট। তার নেতৃত্বেই হিন্দুদের রক্ষায় লাগাতার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল মহাজোট। সুত্র জি নিউজ