আশুলিয়ায় একই পরিবারের তিন নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে কথিত ‘পীর’ মনির হোসেনকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে মনিরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টায় আশুলিয়ার কুরগাঁও আমতলা এলাকার সূর্য ভিলার ৫ম তলার আস্তানা থেকে ওই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মনির হোসেন আশুলিয়ার কুড়গাঁও আমতলা এলাকার সূর্য ভিলার মালিক মৃত (অবঃ) সার্জেন্ট আ. রহিমের ছেলে। সে নিজেকে পীর পরিচয় দিয়ে কতিপয় দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন বয়সের নারী ও পুরুষকে মুরীদ বানিয়ে তাদের মাধ্যমে মাদক ব্যবসাসহ অসামাজিক কাজে লিপ্ত রেখে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করে আসছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে একই এলাকার এক প্রবাসীর স্ত্রী মনির হোসেনের আস্তানায় মুরীদ হন। সেই সুবাদে ‘পীরের দরবারে’ নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার। ওই নারীকে ফুসলিয়ে এবং ধর্মের নানা অপব্যাখ্যা দিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করতে থাকে সে। এরই মধ্যে ভণ্ড পীরের নজর পরে ওই নারীর ছোট বোনের উপর। পরে বড় বোনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে একই কায়দায় ছোট বোনকেও মুরীদ বানিয়ে নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছিল মনির হোসেন। এখানেই শেষ নয়, বড় বোনের ১৩ বছরের কিশোরী মেয়েও রেহাই পায়নি তার কু-দৃষ্টি থেকে। তার মাকে নানা কৌশলে বুঝিয়ে মেয়েও একই কায়দায় ধর্ষণ করতে থাকে। সর্বশেষ গত ২৬ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত ওই কিশোরীকে আটকে রেখে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। এঘটনায় রবিবার সকালে ভুক্তভোগী কিশোরীর খালা কৌশলে পীরের আস্তানা থেকে পালিয়ে আশুলিয়া থানায় এসে ‘পীর’ মনির হোসেনকে প্রধান আসামি করে মকবুল ও হাসনাতসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুজনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ রাতেই কথিত পীরের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্ত মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় আস্তানা থেকে ভুক্তভোগী তিন নারীকে উদ্ধার করা হয় এবং সোমবার সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ রিজাউল হক দিপু জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও সহায়তা, প্রতারণা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অপরাধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।