সংঘর্ষ জর্জরিত রাখাইন প্রদেশে হিন্দুদের গণহত্যা করছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসবাদীরা। ওই অঞ্চলে একটি গণকবর পাওয়া গিয়েছে। ওই কবরে ২৮ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের লাশ পাওয়া গিয়েছে। এমনটাই বিস্ফোরক দাবি করেছে মায়ানমারের সরকারি বাহিনী।
রাখাইন প্রদেশে সেনা ও সন্ত্রাসবাদীদের মধ্যে চলা সংঘর্ষ নিয়ে রবিবার মায়ানমার সেনার ওয়েবসাইটে এক বিবৃতি দেন সে দেশের সেনাপ্রধান। ওই বিবৃতিতে তিনি জানান, আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি’ পরিকল্পনা মাফিক হিন্দুদের গণহত্যা করছে। প্রমাণ স্বরূপ, রাখাইন প্রদেশের যে-বাও-কিয়া গ্রামে হিন্দুদের গণকবর খুঁজে পেয়েছে সেনাবাহিনী। শিশু ও মহিলা-সহ প্রায় ২৮ জন মানুষের লাশ পাওয়া গিয়েছে ওই কবরে।তিনি আরও জানান, টহল দেওয়ার সময় প্রবল দুর্গন্ধ পাওয়ায় ওই গ্রামে তল্লাশি চালায় সেনা।তখনই ওই কবরের হদিশ পাওয়া যায়।তাঁর বয়ানের সমর্থনে বেশ কিছু ছবিও দেওয়া হয় ওই ওয়েবসাইটে। ছবিগুলিতে দু’টি গর্তের পাশে বেশ কয়েকটি লাশ দেখা যাচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, আগস্ট মাসে হিন্দু জনবহুল গ্রামগুলিতে হামলা চালায় রোহিঙ্গা জঙ্গিরা। নির্বিচারে হত্যা করা হয় অনেক গ্রামবাসীকে। এছাড়াও হিন্দু মহিলাদের অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসবাদীরা। সূত্রের খবর, সন্ত্রাসবাদীদের অত্যাচারে ভিটেমাটি হারিয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ।
আগস্ট মাসের ২৫ তারিখ রাখাইন প্রদেশে সেনা ও পুলিশের প্রায় ২৫টি ঘাঁটিতে একযোগে হামলা চালায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসবাদীরা। তারপরই চরম প্রত্যাঘাত হানে সরকারি বাহিনী। অভিযোগ সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে মেতেছে মায়ানমার সেনা। তবে সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন সে দেশের স্টেট কাউন্সিলর সু কি। তবে সংঘর্ষের জেরে প্রায় ৫ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। ক্রমেই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে শরণার্থী সমস্যা। রাখাইন প্রদেশে হিংসা রুখতে ও শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সু কি সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক মহল। তবে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে আপস করা হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন মায়ানমারের প্রশাসনিক প্রধান। ভেরিফিকেশনের মাধ্যমেই শরণার্থীরা ফিরতে পারবেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।