২৩শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ দুপুর ২:০৪

দারিদ্র্য ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে দীপার জিপিএ-৫ অর্জন

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ শুক্রবার, মে ১০, ২০১৯,
  • 321 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও দারিদ্র্য পড়ালেখায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি দীপা নন্দীর। শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও মেধাবী এ শিক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় গত তিন বছর পর দীপাই জিপিএ-৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করলো। তার ইচ্ছা উচ্চশিক্ষা লাভ করে সমাজের সেবা করা।

পানছড়ি উপজেলা সদরের হাজারী টিলা এলাকায় মামা-মামির কাছে থেকে ছোটবেলা থেকে মানুষ হয়েছে দীপা। ছোটবেলায় দীপার মানসিক প্রতিবন্ধী মাকে ছেড়ে চলে যায় স্কুলশিক্ষক বাবা। সেই থেকে দীপা ও তার মা মামা-মামির কাছে থাকে। জন্মগতভাবে দীপার মেরুদণ্ড বাঁকানো। সে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তারপরও এর আগে প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল দীপা।

আর্থিক সংকটের কারণে প্রাইভেট পড়ার সুযোগ ছিল না। তাই পরীক্ষার আগে শিক্ষকরা তাকে বিনা পারিশ্রমিকে পড়াতেন। শিক্ষকদের প্রসঙ্গে দীপা বলে, ‘আমার সফলতার পেছনে আমার মামা-মামির পরই আমার শিক্ষকদের অবদান অনেক বেশি। তারা যদি আমাকে অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা না করতেন তবে আমি এতোদূর আসতে পারতাম না। এখন আমার ইচ্ছে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে পড়া। পড়ালেখা শেষ করে ভালো একটা সরকারি চাকরি করতে চাই। আমার মতো সমাজে যারা সুবিধাবঞ্চিত তাদের নিয়েও কাজ করতে চাই।’

দীপার মামি চুমকি বিশ্বাস বলেন, ‘আমার স্বামী ও আমার সামান্য আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। আমাদের এক মেয়ে ও দীপার পড়ালেখার ব্যয় বহন করা আমাদের পক্ষে কষ্টসাধ্য। এখন যদি সে অন্যত্র পড়ালেখা করতে যায় তাহলে আমাদের পক্ষে তার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়। সমাজের বিত্তবানরা পাশে দাঁড়ালে তার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।’

অভাব-অনটনের মধ্যেও দীপার জিপিএ-৫ পাওয়ার সংবাদ প্রচারের পর পানছড়ির সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমান খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবুল হাশেম দীপার পড়ালেখার ব্যয় বহনের প্রস্তাব দিয়ে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘোষণা দিয়েছেন।

আবুল হাশেম বলেন, ‘এতো প্রতিবন্ধকতার মাঝেও দীপার সফলতা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার অদম্য মেধার কাছে বাধা হতে পারেনি। সে শুধু মেধাবী নয়, সৃজনশীল একজন মানুষও বটে। পানছড়িতে চাকরি করার সুবাদে আমি তার অনেক প্রতিভা দেখেছি।’ দীপা যাতে সমাজের অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে নিজের মেধার স্বাক্ষর রাখতে পারে সেজন্য তিনি সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »