চারটি মার্কিন বি-৫২ বোমারু বিমান কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে অবতরণ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে দুটি রণতরী পাঠানোর প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র আর ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে, ঠিক এমন সময়েই খবর পাওয়া গেলো কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে চারটি বোমারু বিমানও পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প প্রশাসন ও ওয়াশিংটন যখন দাবি করছে, ইরান সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করা মার্কিন সেনাদের ওপর আক্রমণ চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন অভিযোগের দুইদিন পার না হতেই মধ্যপ্রাচ্যে রণতরী আর বোমারু বিমান পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র।
ইরান অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের এমন অভিযোগ বরাবরের মতো অস্বীকার করে আসছে। ইরাকে মার্কিন হামলার সময় যেরকম ‘ভুয়া গোয়েন্দা তথ্য’ ছড়ানো হচ্ছিল ঠিক সেরকম করে যুক্তরাষ্ট্র গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিচ্ছে বলে দাবি ইরানের।
অবশ্য কথিত এ ইরানী আক্রমণের হুমকি সম্পর্কে হোয়াইট হাউস থেকে এখনো বিস্তারিত কিছু বলা হয় নি। যুদ্ধ বিমানবাহী দুটি মার্কিন জাহাজ ইতোমধ্যে পারস্য উপসাগরে পাঠানো হয়েছে। যা সাগরে মহড়া দিচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন।
ইরানকে হুমকি দিতে পারস্য উপসাগরে রণতরী পাঠানোর দুই দিনের মাথায় বি-৫২ মার্কিন বোমারু বিমান কাতারে পাঠানোর খবরটি দিয়েছে মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিবিএস। তবে ওই চারটি বোমারু বিমান নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাস বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন কি করতে চায় তা স্পষ্ট নয়। তবে ইতোমধ্যেই ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে ঘোষণা দেয়ার ব্যাপারটি দুই দেশের সম্পর্কে আরও অবনতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
তবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোল্টন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে কোনো যুদ্ধ চায় না। অবশ্য যেকোনো ধরনের হামলা মোকাবিলায় পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছি আমরা। এর মাধ্যমে ইরানের ক্ষমতাসীন শাসকদের উৎখাত করার ব্যাপারে মার্কিন উৎসাহের ব্যাপারটি গোপন থাকছে না।
বোল্টন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্বার্থ বা তাদের মিত্রদের ওপর কোনো ধরনের হামলা চালানো হলে কঠোর জবাব দেয়া হবে। সেটা ইরানের বিপ্লবী বাহিনী, দেশটির নিয়মিত নিরাপত্তা বাহিনী কিংবা অন্য কোনো বাহিনী হোক।
গত বছর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ইরানের সঙ্গে বিশ্বের ছয় পরাশক্তির সম্পাদিত পারমাণবিক কর্মসূচি বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান। ২০১৫ সালে এই চুক্তিটি হয়েছিল। চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের তেল বিক্রির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।