কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশানাল ক্রাইম ইউনিট- সিটিটিসি তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার, ৬ মে, ২০১৯ -এ মহানগর হাকিম ইয়াসমীনের আদালতে মুতাজকে সোপর্দ করে দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালত শুনানি শেষে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
সিটিটিসির উপ কমিশনার (ডিসি) মহিবুল ইসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সৌদি আরব থেকে সে সিরিয়ায় যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। সে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
সিটিটিসির একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বাংলা ট্রিবিউন জানাচ্ছে, গ্রেফতার হওয়া মুতাজ বংশানুক্রমে বাংলাদেশের নাগরিক। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সৌদি আরবে। সৌদিতে সে তার মা ও ভাইয়ের সঙ্গে বসবাস করতো। তার বাবা আব্দুর মজিদ বেপারি বাংলাদেশি হলেও মা হালিমা পাকিস্তানের নাগরিক। মুতাজ ২০১৪ সালে সৌদি দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করে। ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে ২০১৬ সালে সৌদি আরব থেকে তুরস্ক যায়। তুরস্কে থাকাকালীন সময়ে সে সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসের ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওই সংগঠনের বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। কিন্তু সেসময় সিরিয়ায় ঢুকতে না পেরে আবারও সৌদিআরবে ফিরে যায়। পরবর্তীতে সে ২০১৭ সালে মিশর ও তুরস্ক হয়ে সিরিয়া যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সেবারও ব্যর্থ হয়ে সৌদি আরবে ফিরে যায়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের মে মাসে নিষিদ্ধ সংগঠন আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। ২০১৮ সালের শেষ দিকে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের পতন শুরু হলে অন্যদের মতো সেও পালিয়ে আবার তুরস্কে ফিরে আসে। প্রথমে সে সেখান থেকে সে গ্রিস হয়ে অন্য কোনও ইউরোপীয় দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে তুরস্কের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সন্ত্রাসীবিরোধী অভিযান জোরদার করলে ইউরোপে না গিয়ে এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের আরেকজন কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে নতুন করে ঢাকায় আসা মুতাজের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। এরপর থেকেই তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলতে থাকে। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন প্রযুক্তির মাধ্যমে ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।