সিরিয়া ও ইরাক থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর আইএস বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী
কার্যক্রম চালিয়ে যাবে সেটাই স্বাভাবিক। এরই ধারাবাহিকতায় তারা বাংলাদেশেও
ধর্মের দোহাই দিয়ে সমাজকে উগ্রপন্থার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
’
শুক্রবার (১০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া
হলে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও সাম্প্রদায়িকতা এবং জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চ
আয়োজিত ‘নিউজিল্যান্ড থেকে শ্রীলঙ্কা, আমাদের শঙ্কা ও নাগরিক সমাজের
করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
বক্তারা বলেন, ‘কওমি
এবং হেফাজত মদদপুষ্ট মাদ্রাসার পাঠ্যক্রম এবং এদের কিছু ওয়াজ মাহফিলে নারী
সম্পর্কে যেভাবে বিষোদগার করা হয়, তাতে সরকারকে উগ্রবাদের সামনে নতজানু
হয়ে থাকার দোষে দায়ী করা ছাড়া উপায় থাকে না। সম্প্রতি সম্মিলিত সামাজিক
আন্দোলনের নেত্রী সুলতানা কামালসহ শাহরিয়ার কবির ও অধ্যাপক মুনতাসীর
মামুনকে হত্যার হুমকি দিয়েছে ‘লোন উলফ’ নামক আইএস-এর একটি জঙ্গি সংগঠন। ’
বক্তারা
আরও বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশ্যে “শীঘ্রই আসছি,
ইনশাল্লাহ” লিখে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে হুঁশিয়ারি
দিয়েছে জঙ্গিরা। কয়েকদিন আগে ঢাকায় ককটেল বিস্ফোরণ, গ্রেফতারের মুহূর্তে
দুই জঙ্গির আত্মঘাতী এবং পাঁচ জঙ্গির পলায়ন, খুলনায় দুই জঙ্গি গ্রেফতার
এবং ১১ জঙ্গির পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বোঝা যায় যে আইএস মদদপুষ্ট
বিভিন্ন দেশ থেকে বিতাড়িত জঙ্গিরা বাংলাদেশে বহাল তবিয়তেই আছে।’
জঙ্গিবাদ
নির্মূলে করণীয় সম্পর্কে বক্তারা বলেন, ‘বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ থাকলেও প্রকৃত স্বস্তির পরিবেশ কেবলমাত্র দেশব্যাপী
একটি হেলিং ক্যাম্পেইন দ্বারাই সম্ভব হতে পারে। এই ক্যাম্পেইন যে বিফলে
যাবে না তার প্রমাণ পেতে পারি চার দশক আগে সিঙ্গাপুরের সব শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে একটি সর্বমত সহিষ্ণুতার ক্যাম্পেইনকে স্মরণ করে। সে
ক্যাম্পেইনের মূল সুরের যেমন অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ার প্রত্যয় ছিল,
তেমনি যুক্তি নির্ভরতা এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তি শ্রেষ্ঠত্বের কথাও ছিল।
ধর্মীয়
সন্ত্রাস মোকাবিলায় আক্রমণ ও প্রতিশোধ নেওয়ার সংস্কৃতি পরিহার করে
সর্বধর্ম সহিষ্ণুতার একটি প্রজন্ম পরম্পরাব্যাপী অভিযান আমাদের শুরু করতে
হবে। এছাড়া সরকারের ভেতরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং মন্ত্রী আমলা এবং তাদের
সুবিধাভোগীদের দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে না পারলে দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য আরও
বাড়বে। ’
আলোচনা সভায় সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি জিয়াউদ্দিন
তারেক আলী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক
প্রধান, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, বিশিষ্ট
অর্থনীতিবিদ ড রমণী মোহন দেবনাথসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।