স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশব্যাপী নিরাপদ সড়কের দাবীতে দীর্ঘদিনের টানা আন্দোলনের পরেও থামছে না মৃত্যুর মিছিল। বরং প্রতিদিনই মৃত্যু মিছিল আরও দীর্ঘ হচ্ছে। সারাদেশের ন্যায় বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ঝড়ে যাচ্ছে একের পর এক তাজাপ্রান। পঙ্গুত্ব বরণ করে অসহায় জীবন-যাপন করছে নারী ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ।
দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল ১২ মে পর্যন্ত মহানগরী ও বরিশালসহ পাশ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নারী-শিশুসহ ৮২ জনের প্রানহানি ঘটেছে। তাছাড়া দুর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন দুই শতাধিক নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে কেউ চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবার কেউ হাসপাতালে পৌঁছাবার আগেই মারা গেছে।
শেবাচিম হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টারের অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। ফেব্রæয়ারী মাসে ১৪ জন। মার্চ মাসে ৩২ জন। এপ্রিল মাসে ২১ জনসহ চলতি মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে এ হাসপাতালেই প্রতি মাসে গড়ে ৫০ জনেরও অধিক মানুষ চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। যারমধ্যে বেশিরভাগ মানুষ হাড় ভাঙা নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন।
বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাবেক সভাপতি এসএম ইকবাল বলেন, দুর্ঘটনার প্রধান কারন হিসেবে আগে যাওয়ার প্রবনতাকেই আমি দায়ী করবো। সাধারণ মানুষ, যানবাহনের চালক এমনকি ট্রাফিক বিভাগই ট্রাফিক আইন মেনে চলছেন না। তিনি আরও বলেন, পুলিশের একার পক্ষে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা কখনই সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিকসহ সকল মহলকে একযোগে কাজ করতে হবে। নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে ব্যাপকহারে প্রচারনার পাশাপাশি ট্রাফিক আইনকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক)
খায়রুল আলম মাইনরিটি নিউজকে বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা যথেষ্ঠভাবে
কাজ করে যাচ্ছি। মামলা দিচ্ছি, বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। গত ২০১৮ সালে
মহানগরীতে আমরা ৩৯ হাজারেরও অধিক মামলা দিয়েছি। তারপরেও সচেতনতার অভাবে
দুর্ঘটনা কমানো যাচ্ছেনা। তিনি আরও বলেন, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সবাইকে জানা
এবং জ্ঞান অর্জন করতে হবে। পাশাপাশি পাঠ্য বইতে ট্রাফিক আইন সম্পর্কিত
একটি অধ্যায় রাখা হলে ছোট থেকেই আইনের প্রতি ধারনা এবং সম্মান বাড়বে বলেও
তিনি উল্লেখ করেন।