নিকুঞ্জ বালা পলাশ, সম্পাদক ও প্রকাশক দৈনিক সাহসী বার্তা ও বরিশাল বিভাগীয় প্রতিনিধি জিটিভি. . . .
বরিশালে আমরা যারা সাংবাদিকতা পেশায় নিজেদের জড়িয়ে রেখেছি নানা প্রতিকুলতাকে সামাল দিয়েই আমাদের এ পেশায় থাকতে হচ্ছে। এক সময় আমরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সর্বহারা-সন্ত্রাসী-ডাকাত,চাঁদাবাজ ও প্রভাবশালীদের ভয় পেতাম। কারন এদের বিরুদ্ধে পত্রিকা বা টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশ হলে তাদের হাতে নিগৃহিত-নির্যাতন কিংবা প্রন নাশের হুমকি ছিলো আমাদের। কিš‘ এখন উপরের কাউকেই নয়, এখন আমরা সংবাদ কর্মিরা পুলিশকেই আমাদের প্রধান শত্রু হিসেবেই ভাবছি। কখন আবার আমাদের ডিজিটাল আইনের মারপ্যাচে গ্রেফতার করে জেলে ঢুকিয়ে দেয় এমন আশংকায় দিন কাটে আমাদের। বরিশালে সাংবাদিকতা পেশায় আমার ২২ টি বছর কেটে গেলো। সাংবাদিকতার শুরুতে আমি অনেক সিনিয়র সাংবাদিকদের সংস্পর্শ পেয়েছি এবং এখনো অনেক সিনিয়র সাংবাদিকদের অনুপ্রেরনা পা”িছ। বিশেষ করে ইত্তেফার পত্রিকার বরিশাল অফিসের সাবেক সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার বরিশালের কিংবদন্তি সাংবাদিক প্রয়াত মাইনুল হোসেন ভাই আমাকে অনেক ¯েœহ করতেন। আমি আমার পেশার শুরুতেই তার কাছে গিয়ে অনেক কিছুই শিখেছি। তবে আমার এ পেশার গুরু ওই সময়ে দৈনিক দÿিনাঞ্চল পত্রিকার বার্তা সম্পাদক বর্তমানে দৈনিক যুগান্তরের ও এনটিভির বরিশাল ব্যুরো চীফ আক্তার ফারুক শাহীন ভাই। তিনি মুলত আমাকে এ পেশায় এনেছেন। তবে তিনি আমাকে এ পেশায় না আসার জন্য শুরুতেই নিরুৎসাহিত করেছিলেন। কিš‘ তার সেই নিরুৎসাহকেই আমি আমার জীবনের একমাত্র অবলম্বন হিসেবেই বেছে নিয়েছি। আমার যতদুর মনে পরে সাংবাদিকতার শুরুতে একটি ইন্টারভিউ আনতে গিয়ে বরিশালের একজন জেলা প্রশসক কর্তৃক একজন সাংবাদিক হিসেবে যে সম্মান পেয়েছিলাম সেই সম্মান বোধই আমার কাল হয়েছিলো। শখ করে সাংবাদিকতায় এসে শেষ পর্যন্ত পেশাদারিত্ব। সে অনেক কথা। এসব না লিখে যে কারনে মুলত আমি লিখতে বশেছি সে বিষয় নিয়েই আজ না হয় একটু লিখি। সাংবাদিকতা পেশায় আসার কয়েক বছর পরে আমি দৈনিক দÿিনাঞ্চল পত্রিকা ছেড়ে শ্রদ্ধেয় সৈয়দ দুলাল দা কর্তৃক প্রকাশিত দৈনিক আজকের পরিবর্তন পত্রিকায় যোগ দিয়েছিলাম। যতদুর সম্ভব ২০০৩ সালে হেনরি স্বপন দা তখন পরিবতর্ন পত্রিকায় লেখা লিখি করতেন। তখন থেকেই আমার তার সাথে বেশ ভালো সম্পর্ক। রাজনৈতিক মতাদর্শের বাইরে মুক্তি যুদ্ধের স্ব-পÿের একজন মানুষ হিসেবে স্বপনদা আমাকে বেশ পছন্দ করতেন। আমিও তাকে সেভাবে মূল্যায়ন করতাম। আমার জানা মতে সাদা ও ভালো মনের কোন মানুষ থাকলে তিনি সেই কাতারে পরেন। আমার জানা মতে তিনি কাউকে হুমকিতো দুরে থাক চোখ রাঙ্গিয়ে কথা বলেছেন কিনা সন্দেহ আছে। আর সেই হেনরী স্বপন দা আজ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার! ভাবতে অবাক লাগে।
আমার জানা মতে, কোতয়ালী থানায় মামলা হতে হলে অবশ্যই ওসির নির্দেশ বা সম্মতি লাগবেই। তার নির্দেশনা ছাড়া কোন মামলা রুজু হতে পারে না। যে কোন ব্যাক্তি যে কাউর বিরুদ্ধে মামলা করতেই পারেন। আর থানা পুলিশ মামলা নিবে এটাও স্বাভাবিক। কিš‘ কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো নুরুল ইসলাম যেহেতু বরিশাল অঞ্চলের মানুষ। এছাড়া তিনি বরিশালের বিভিন্ন থানার ওসি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নিশ্চয়ই সাংবাদিক হেনরী স্বপন দা সম্পর্কে ভালো করেই জানেন। কিš‘ এতো কিছু জানার পরও কেনই বা তিনি তদন্ত না করে হেনরী স্বপনের নামে মামলা নিলেন এবং মামলার পরপরই গ্রেফতার কওে জেল হাজতে পাঠানোর ব্যাব¯’া নিলেন। বিষয়টি অবশ্যই আমাদের সাংবাদিক মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। উজিরপুর-বাকেরগঞ্জসহ বিভিন্ন থানায় দ্বায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন কারনে কোতয়ালী মডেল থানার বর্তমান ওসি মো : নুরুল ইসলামের সাথে আমার বেশ সু-সম্পর্ক রয়েছে। শুধুূ আমি নই পেশাগত কারনে আমার অনেক সহকর্মির সাথে তার অনেক গভীর সম্পর্ক আছে। তিনি অপরাধ না করেও অনেক বার তার উর্দ্ধতন কর্তপÿের দৃস্টিতে অপরাধী ছিলেন। এ কারনে তাকে অনেক গঞ্জনা ও বিরাম্বনার শিকার হতে হয়েছে। ওই সময় আমরা কয়েক সংবাদ কর্মি তার উপর অমানবিক আচড়ন মেনে নিতে পারিনি। আমরা তখন সত্যের পথে তার জন্য কলম নিয়ে লড়াই করেছিলাম। এমনকি বিগত নির্বাচনে টাকা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তৎকালীন ডিআইজির অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়টি আমাদের কাছে তথ্য সরবরাহ করেছিলেন ওসি নুরুল ইসলাম। এ কারনে তাকে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে বদলী কনে আনা হয়েছিলো। আমরা কয়েকজন সহকর্মি ওসি নুরুল ইসলামের সাথে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা খুজে বের করে পত্রিকার পাতায় তুলে ধরেছিলাম। যে শহরে আমাদের বসবাস সেই শহরের একজন উদর্ধতন পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে নিউজ করলে আমাদের কি হবে তা না ভেবে আমরা তার বিপদে তার পাশে গিয়ে দাড়িয়েছিলাম। সত্য ঘটনা পত্রিকার পাতায় তুলে ধরার কারনে আমাকেসহ জনকণ্ঠের বরিশাল প্রতিনিধি খোকন আহম্মেদ হীরাকে নানান ভাবে হুমকিও দেওয়া হয়েছিলো। কিš‘ সে হুমকি উপেÿা করে আমরা ওসি নুরুল ইসলামের পাশে ছিলাম। আমরা সত্যের জন্য লড়াই করেছি এবং এখনো করে যা”িছ। কিš‘ যে পুলিশ কর্মকর্তাকে আমরা এতোটা বিশ^াস করেছি এবং করি তিনি কি করে আমাদের এতোটা অবিশ^াস করেন তা ভাবতেই অবাক লাগে। হেনরী স্বপন দার মতো একজন ভালো মানুষের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নিতে এবং মামলার পর তাকে গ্রেফতার করতে কি তার বিবেকে একটুকুও বাধলো না !! আমরা অনেকে খুব খুশি হয়েছিলাম যখন আমরা জানতে পারি তিনি কোতয়ালী মডেল থানার ওসি হিসেবে যোগদান করছেন এমন খবরে। আমরা অনেকেই ভেবেছিলাম হয়তো আমরা আর অন্যায় ভাবে হয়রানীর শিকার হবো না। কারন ওসি নুরুল ইসলাম একজন দÿ ও সাংবাদিক বান্ধব মানুষ। কিš‘ কি ভেবেছি আর এখন কি দেখছি আমরা। উনি এখন আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েই যাচাই বাছাই না করে মামলা নিয়ে গ্রেফতার করে জেলে পুরছেন। ইতিমেধ্যই ওনার জামানায় বেশ কয়েকজন সংবাদ কর্মি গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছে। সাংবাদিকরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজপথেও দাড়িয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করতে পারছেন না। এমনকি সাংবাদিকদের পÿে মানববন্ধনে এসে গ্রেফতার হয়েছে সাধারন মানুষ। বরিশাল নগরীতে আমার সাংবাদিকতা পেশার ২২ বছরে আমি কোতয়ালী মডেল থানায় অনেক ওসিকে দেখেছি। ওনার মতো কাউকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এভাবে মারমুখি ভুমিকায় অগ্রসর হতে দেখিনি। উনি সাবেক ওসি আওলাদ হোসেন ও ডিঅইজি আব্দুর রহিমকেও কয়েক ধাপ ছাড়িয়ে গেলেন। আসলে এসব করে উনি কি বুঝাতে চাইছেন সেটা হয়তো আমরা অনেকেই বুঝে গেছি। অন্য কারো ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে চাইনা, তবে হেনরী স্বপন দা কাউকে হুমকি ধামকি দি”েছ বা অপরাধ করছে এটা পুলিশ বিশ্বাস করলেও আমরা সংবাদ কর্মিরা বিশ্বাস করি না। কারন আমরা হেনরি স্বপন দাকে কাছ থেকে চিনি ও জানি। সব শেষ বলবো ওসি সাহেব আপনাকে আমরা অনেকেই ভালো করে চিনি ও জানি। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এভাবে প্রতিবাদী ভুমিকায় না গেলেই কি নয়! আমি প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপÿের কাছে আবেদন নিবেদন করে বলতে চাই, সাংবাদিকদের আপনারা বন্ধু বলবেন আবার বন্ধুকেই বিনা দোষে গ্রেফতার ও হয়রানী করবেন তাতো হতে পারে না। আমরা অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছি, আর নয়। জল অনেক দুর গড়িয়েছে। এখনো সময় আছে নিজেদের সুধরে নেওয়ার। এভাবে সংবাদ কর্মিদের বিরুদ্ধে আপনারা স্ট্রিম রোলার চালালে আমারাও প্রতিবাদের ভাষা কলম দিয়ে পুশিয়ে নিবো। আমরা প্রকৃত সংবাদ কর্মিরা অসৎ নই। আমাদের আপনাদের মতো কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় নেই। নেই গাড়ি বাড়ি ও ফ্লাট। সাংবাদিকরা একবার ÿেপে গেলে থলের কালো বিড়াল বের করে আনতে বেশি দেরি সময় লাগবে না। আমরা অবিলম্বে সাংবাদিক হয়রানী ও নির্যাতন বন্ধ চাই। নিশর্^ত মুক্তি চাই সাংবাদিক ও কবি হেনরি স্বপনের।