৩১শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ রাত ৯:১০

খোকসায় মন্দির ও সমাধীস্থল গুড়িয়ে দিয়ে আশ্রমের জমি দখল

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ রবিবার, মে ১৯, ২০১৯,
  • 241 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

খোকসা প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার খোকসার গ্রামে প্রভাবশালী চক্র কালী মন্দির ও সমাধীস্থল গুড়িয়ে দিয়ে আশ্রমের জমি দখল নিয়ে শাক বুনেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এক ইউপি সদস্যসহ দুই জনকে পুলিশ আটক করেছে।  উপজেলার জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের উথলী গ্রামে বাউল সাধক রূপ কুমার অধিকারীর আশ্রম। আশ্রমের মূল ঘরের সামনে বাউল সাধকের বাবা রাম গোপাল ও মা উমা অধিকারীর সমাধীস্থল। তার পাশেই  ছোট্ট একটি কালী মন্দির। তাতে টিনের ছাউনি আর পাটকাঠির বেড়া। সমাধিস্থল দুটি আটসাট করে ঘেরা ছিল। দুই বছর আগে সাধক রূপ কুমার অসুস্থ্য হয়ে পরলে আশ্রমের জমির আংশিক মালিকানা দাবি করে প্রভাবশালী বাদশা মন্ডল। এক পর্যায়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্থানীয় নেতাদের মধ্যস্ততায় ৪৮ হাজার টাকায় রফা হয়। এর মধ্যে বাদশাকে ১০ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে রূপ কুমার মারা যায়। আশ্রমের জমি দখল নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে প্রভাবশালী চক্রটি। সাথে যোগ দেয় জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আরিফুল ইসলাম নয়ন। থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে শুক্রবার দুপুরে আশ্রমের কালী মন্দির ও সাধক রূপ কুমারের বাবা মায়ের সমাধী গুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানে বপণ করা হয় শাকের বীজ। পরদিন গতকাল শনিবার সকালে আশ্রমের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনের নামে খোকসা থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদি হয়েছেন আশ্রমের সেবায়েত সমীর বিশ্বাস। এ ঘটনায় জড়িত ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম নয়ন ও বাদশা মন্ডলকে পুলিশ আটক করেছে। হামলার বর্ণনা দিলেন প্রতিবেশী বৃদ্ধা গীতা রানী, চতুর্থ শ্রেণির স্কুল ছাত্র নীরব, মজির্না, রবিউলসহ অনেকেই। শুক্রবার তখন দুপুর ১টা। গ্রামের লোকেরা জুমার নামাজে মসজিদে গেছেন। এমন সময় নয়ন মেম্বর ও বাদশা মন্ডলসহ ৮/১০ লোক এসে প্রথমে আশ্রমের জরাজীর্ণ কালী মন্দিরটির চালা ভেঙ্গে ফেলে। এরপর সাধক রূপ কুমারের বাবা মায়ের সমাধীর বেড়া ভেঙ্গে জমি কুপিয়ে সমান করে। পরে বাদশার লোকজন সেখানে শাকের বীজ বপণ করে রেখে যায়।

আশ্রমের সেবায়েত মামুন হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে প্রভাবশালী বাদশা ও নয়ন মেম্বরের নেতৃত্বে প্রথমে আশ্রমের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়। পরে দুপুরে এইসব লোকেরা আশ্রমে হামলা চালিয়ে কালী মন্দির ও সাধকের বাবা ও মায়ের সমাধী স্থল ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। আটক ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম নয়ন বলেন, তারা মন্দির বা প্রতিমা ভাঙ্গেননি। যেটি ভাঙ্গা হয়েছে সেখানে ৩/৪ বছর আগেই পূজা বন্ধ হয়ে গেছে। আর জমির মালিক বাদশা। আশ্রম পরিচালনা কমিটির সভাপতি শামীমা আক্তার জানান, আশ্রমের আশে পাশের ২৮ শতক জমির মালিক ছিল রূপ পাগলের বাবা। কিন্তু প্রভাবশালীরা অনেক আগেই জমি দখল নিয়ে কাগজ তৈরী করে নেয়। আশ্রমের মন্দির ও সমাধীর জমি দখলের চেষ্টা করে আসছিল প্রভাবশালী এ চক্র। ভবানীগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে প্রথমে আশ্রম উচ্ছেদের চেষ্টা করে। সে সময় পুলিশ একাধিক বার অভিযান করেছে। পরে নিজেদের লাঠির জোর খাটিয়ে মন্দির ও সমাধী ভেঙ্গে জমি দখল নিয়েছে।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবিএস মেহেদী মাসুদ বলেন, আশ্রমে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মোট ৪ জনকে আসামী করা হয়েছে। আসামীদের মধ্যে জমির মালিকানার দাবিদার বাদশা মন্ডল ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর আরিফুল ইসলাম নয়নকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের আটকে অভিযান চলছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »