৩০শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ রাত ৩:৩২
ব্রেকিং নিউজঃ
আদিবাসী ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার “বিশ্বরেকর্ড গড়লো বাংলাদেশের গর্ব ঋতুরাজ ভৌমিক হৃদ্য” রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন মো. সাহাবুদ্দিন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশ শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি হলেন দেশ সম্পাদক সুমন হালদার বিশ্বে নেতৃত্বের ভূমিকা নিতে যাচ্ছে ভারত : হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা আজ ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী দিবস । কৃত্বিতে খ্যাতি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের একজন মুন্সী আব্দুল মাজেদঃ ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে প্রশ্ন : এক হিন্দুকে বাদী করতে চেয়েছিলেন শাল্লার ওসি আফগানিস্থানে শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী হামলা : নিহত ১৯ টাঙ্গাইলের মধুপুরে হিন্দু যুবককে কুপিয়ে আহত করে জাহেদুল

আমি আজও অবাক হই

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৪, ২০১৭,
  • 372 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

আমি আজও অবাক হই সেই হেফাজতি গুন্ডাদের বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের কেন কোনও ক্ষোভ দেখিনি, যারা বায়তুল মোকাররমের আশেপাশের দোকানের শত শত কোরআন পুড়িয়ে দিয়েছিল!

টিটু রায় নামের এক লোক নাকি ইসলামের অবমাননা করেছে ফেসবুকে। ১০ হাজার মুসলমান জড়ো করা কি চাট্টিখানি কথা? শুনেছি হামলাকারীরা নাকি চেয়েছিল হিন্দুদের বাড়িঘর লুট করে পুড়িয়ে দিতে। আজকাল এই অপকর্মটি করা বড় সহজ। শুধু গুজব একবার ছড়িয়ে দিলেই হয় যে এ পাড়ার বা এ গ্রামের এক হিন্দু লোক ইসলামের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লিখেছে।

ব্যস, উন্মত্ত মুসলমান হাতে দা-বটি-লাঠি আর আগুন হাতে ঝাঁপিয়ে পড়বে। কেউ জানতে চাইবে না ইসলামের অবমাননা ঠিক কিভাবে করা হয়েছে, জানতে চাইবে না যে লোক অবমাননা করেছে বলা হচ্ছে সে লোকের ফেসবুক আইডি কী আসল না নকল, জানতে চাইবে না বাংলাদেশের হিন্দুরা জেনে বুঝে এই ঝুঁকি নেওয়ার সাহস করবে না, তাহলে কি হিন্দু নয়– কোনও মুসলমানই হিন্দুর নামে আইডি খুলে ইসলামের অবমাননা করেছে!

রংপুরের গ্রামে এভাবেই হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছে, যেরকম করেছিল নাসির নগরে। রসরাজ নামের এক হিন্দু জেলেকে ফেসবুকের পোস্টের জন্য ফাঁসিয়েছিল। ওই ছুতোয় হিন্দুদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল। পরে সত্য ঘটনা বেরিয়ে এসেছে।

রসরাজ ফেসবুকের কিছুই জানে না। ওর নামে ফেসবুকে আইডি খুলে আসলে কোনও এক মুসলমান অপকর্মটি করেছিল, এবং দল গঠন করেছিল কী করে হিন্দুদের বাড়িঘর লুট করা যায়, কী করে ওদের সব কিছু পুড়িয়ে দেওয়া যায়, কী করে ভয় পাইয়ে দিয়ে দেশ থেকে তাড়ানো যায় ওদের, এবং তারপর কী করে দখল করা যায় হিন্দুদের ভিটেমাটি। রংপুরেও একই চিত্র।

টিটু রায় নামের কেউ ওই গ্রামে ৭ বছর যাবত বাস করে না। টিটু রায় দেনার দায়ে গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়ে বহুদূরের শহরে গার্মেন্টসে কাজ করে বেঁচে আছে। টিটু রায় দেয়নি কোনও স্ট্যাটাস, দিয়েছিল খুলনার মওলানা আসাদুল্লাহ হামিদী। মওলানা হামিদীর উদ্দেশ্য ছিল সিলেটের কোনও এক হিন্দু যুবক রাকেশ মন্ডলকে বিপদে ফেলা। মওলানা হামিদীর স্ট্যাটাস শেয়ার করেছিল এমডি টিটু নামের একজন। এই এমডি টিটুকেই রংপুরের পাগলাপীর এলাকার টিটু রায় ভেবে টিটু রায় এবং তাদের প্রতিবেশীদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
নাসিরনগরের রসরাজের আইডি যেমন একজন মুসলমান তৈরি করেছিল রসরাজের বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ দিয়ে হিন্দু গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য, ঠিক তেমনি এমডি টিটু নামের আইডিও একই উদ্দেশে তৈরি করেছে কোনও মুসলমান।
বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের একাংশ দিন দিন চরম হিন্দু-বিদ্বেষী হয়ে উঠছে। তারা অমুসলিমদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে একশ ভাগ মুসলমানের দেশ বানাতে চায় বাংলাদেশকে।

ভালো যে হিন্দুদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার আগে জানাজানি হয়ে গিয়েছিল যে কাজটি কোনও হিন্দুর নয়, হাবিবুর রহমান নামের এক মুসললমানের। আমি জানি না হাবিবুর রহমান বা তাকে দিয়ে যারা এ কাজটি করিয়েছিল, তাদের আদৌ কোনও শাস্তি হয়েছিল কিনা।
আমি আজও অবাক হই সেই হেফাজতি গুন্ডাদের বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের কেন কোনও ক্ষোভ দেখিনি, যারা বায়তুল মোকাররমের আশেপাশের দোকানের শত শত কোরআন পুড়িয়ে দিয়েছিল!

লেখিকা তসলীমা নাসরীন

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »