বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) ইন্টার্ন চিকিৎসক ও রোগীদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। রোববার সকালে হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় এক চিকিৎসক লাঞ্চিত ও রোগীর দুই স্বজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোগীর ফুফাতো ভাই ও জেল পুলিশের সদস্য মিজানুর রহমান জানান, তার বোন বরিশাল নগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিন আলেকান্দার বাসিন্দা মোঃ শাহিনের স্ত্রী আমেনা বেগম সন্তান প্রসবের পর রক্তক্ষরন জনিত কারনে গতকাল শনিবার (১৮ নভেম্বর) শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হন।
ভর্তির পর লোবার ওয়ার্ডের ইউনিট-২ এর আওতায় চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তার চিকিৎসাসেবা অব্যাহত ছিলো। ভোররাতে
শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে ওয়ার্ডের চিকিৎসকের স্মরনাপন্য হন স্বজনরা। এসময় রোগীর রক্তের প্রয়োজন বলে চিকিৎসক জানালে সকাল ৬ টার দিকে রক্ত জোগার করে ফেলা হয়। কিন্তু চিকিৎসক নানান দোহাই দিয়ে কালক্ষেপন করে ভর্তি কাগজে লিখে দেন যে, রক্তের অভাবে রোগীর অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। এ নিয়ে আমেনা স্বামী শাহীন ও তার বড়ভাই মামুনের সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসেকের সাথে বাক-বিতান্ডা হয়, একপর্যায়ে ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক আরো লোকজন ডেকে এনে শাহীন ও মামুনকে রুমের মধ্যে আটকে ও পরে রোগীর কাছে গিয়ে বেধম মারধর করে।
এসময় রোগীকে লাথি মারে চিকিৎসকরা। পরে পালিয়ে গিয়ে স্বজনরা রক্ষা পায়। এদিকে সকাল থেকে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক রয়েছে বলে দাবী করেছেন স্বজনরা। আর চিকিৎসকদের হামলার শিকার রোগীর সামী শাহিনকে স্থানীয় একটি চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে বিষয়টি ভিন্ন বলে জানিয়েছে গাইনীয় ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান ডাঃ শিখা সাহা জানান, তিনি খবর পেয়ে ওয়ার্ডে যান এবং চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, একপর্যায়ে রক্তের অভাবে রোগীর অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না চিকিৎসক এমনটা ভর্তি কাগজে লিখলে ইন্টার্ন চিকিৎসক ডাঃ রাকিবের কলার ধরে লাঞ্চিত করে রোগীর স্বজনরা। এসময় সে আত্মরক্ষার্থে অন্য ওয়ার্ডের চিকিৎসকদের জানালে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হতে পারে। আর রোগীকে মারধর করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যে হাতাহাতির সময় তার শরীরে গিয়ে কেউ পরতে পারে। স্বজনদের আচরনের কোন প্রভার রোগীর ওপর নেই বলে জানিয়ে ডাঃ শিখা সাহা বেলা সোয়া ১২ টায় জানান, রোগীর রক্তক্ষরন না থামায় তাকে ৫ম তলার ওটিতে নিয়ে আসা হয়েছে। সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে, অবস্থা উন্নতির দিকেই ধাবিত হচ্ছে। আশাকরি রোগী সময়ের সাথে সাথে সুস্থতা লাভ করবেন। এদিকে ঘটনার পর সকাল ১০ টার দিকে থানা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কোতোয়ালি থানার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আসাদুজ্জামান জানান, রোগীকে রক্ত দেয়া নিয়ে চিকিৎসকদের সাথে স্বজনদের ঝামেলা হয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মৌখিক অভিযোগ পেলেও কোন লিখিত অভিযোগ পাননি। তবে এখন রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী চিকিৎসকদের সাথে পুলিশের পক্ষ থেকে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপালে রোগীদের লাঞ্চিত করার ঘটনা পুরানো প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটছে দেখার কেউ নেই ।