আর্থিক সুবিধা নিয়ে ছাত্রশিবিরের সক্রিয় ভূমিকায় থাকা শামীম আহম্মেদ সোহাগকে ছাত্রলীগের সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি বানানো হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভির হুসাইন সুজন ও সাধারণ সম্পাদক এহসান হাবীব অয়নের যৌথ সাক্ষরিত চিঠিতে গত শুক্রবার পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এ আংশিক কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়। পরদিন শনিবার সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বর্তমান সাংসদ ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হকের বাসায় তাদেরকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, নির্ধারিত সময়ের পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও নতুন কমিটি গঠিত না হওয়ায় হাতাশা ও সংশয়ে ছিলেন কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতা কর্মীরা। সাংগঠনিক কার্যক্রম দুর্বল হয়ে পড়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত এক চিঠিতে কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের বার্ষিক কাউন্সিলের জন্য আগামী ২৮ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়। এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সাধারণতঃ সম্মেলনের দিন ধার্য হলে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু জেলা ছাত্রলীগের চেহারাটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। কেন্দ্রের নির্দেশ ও নীতিমালার তোয়াক্কা না করেই তাদের অধীনস্ত ইউনিটগুলোর কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু করা হয়। জামায়াত শিবির পরিবারের সক্রিয় সদস্যদের ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান করে দেওয়ার নাম করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভির হুসাইন সুজন ও সাধারণ সম্পাদক এহসান হাবীব অয়ন আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তাদেরই দলের নেতা-কর্মীরা।
অভিযোগ, কালিগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুরের শেখ ইব্রাহীমের ছেলে শাওন আহম্মেদ সোহাগ ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় নেতা। এছাড়া কালিগঞ্জের হেভিওয়েট জামায়াত ও শিবিরের নেতাদের সঙ্গে রয়েছে তার ব্যাপক ঘনিষ্ঠতা।
কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বি. চৌধুরী বলেন, তদন্ত না করে যেনতেন প্রকারে কমিটি দিলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনার অপমৃত্যু ঘটবে। জেলা ছাত্রলীগ কমিটি গঠনের নামে একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে।
ছাত্রলীগ নেতা অনিক মেহেদী ও রাশিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের নেতা যেই হোক না কেন সে আওয়ামী পরিবারের সন্তান হলে কোন কথাই ছিল না। অথচ শাওন আহম্মেদ সোহাগের মত শিবির ক্যাডার যদি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হয় তাহলে সাতক্ষীরার মাটি থেকে আওয়ামী লীগ মুছে যেতে সময় লাগবে না।
সাতক্ষীরা সিটি কলেজের অনার্স চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র শাওন আহম্মেদ সোহাগ বলেন, ছাত্রশিবিরে অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত যে ফরম দেখানো হচ্ছে এটা পরিকল্পিত। কারণ দু’টি অংশের একটি তার কাছে থাকার কথা। তা না হলে দু’টি অংশ জোড়া লাগিয়ে কাল্পনিকভাবে নাম সংক্ষিপ্ত আকারে সাক্ষর দেখানো হয়েছে। ছাত্র শিবিরের কানেকশন প্রমাণ করতে পারলে তিনি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে দাবি করেন।
সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এহসান হাবিব অয়ন বলেন, কালিগঞ্জ কেন, কোন কমিটিতে শিবির কর্মীরা কৌশলে ঢুকে পড়লে অভিযোগ পাওয়ার পর যাচাই বাছাই করে তাকে বাদ দেওয়া হবে