মিসরের উত্তরাঞ্চলীয় সিনাই উপত্যকায় মসজিদে হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা তিনশ’ ছাড়িয়েছে। শুক্রবারের ওই হামলায় আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মুসল্লি। এদিকে হামলায় জড়িত অনেকেই বিমান হামলায় নিহত বলে দাবি করেছে মিসরের সেনাবাহিনী। কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘মিনা’ জানায়, মসজিদে জঙ্গিদের গুলি ও বোমা হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩০৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১২০ জন।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র তামির রিফাই এক বিবৃতিতে বলেন, ‘হামলা শেষে পালিয়ে যাওয়ার সময় হামলাকারীদের ধাওয়া করে মিসরীয় বিমানবাহিনী। তাদের ব্যবহৃত গাড়িগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়।’
কেউ দায় স্বীকার না করলেও শনিবার দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটরের দেওয়া বিবৃতিতে আইএস এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, হামলাকারীরা ইরাকি আইএস’র পতাকা নিয়ে এসেছিল।
এ ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে মিসর সরকার। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তা আল সিসি। শুক্রবার এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি একে ‘জঘন্য অপরাধ’ ও ‘ভীরুতাপূর্ণ আচরণ’ বলে অ্যাখ্যায়িত করেন। এ সময় তিনি হামলাকারীদের শাস্তি দেওয়া হবে ঘোষণা দেন। সিসি বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ এ হত্যার প্রতিশোধ নেবে। দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবে।’ এরপর শুক্রবার রাতে আইএসের বিভিন্ন ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটির বিমান বাহিনী।
এর আগে সুন্নি অধ্যুষিত সিনাই প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনী ও সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে শুক্রবার জুমার নামাজের পর চারটি গাড়িতে এসে আল-আরিশের কাছে বির-আল আবেদ শহরের আল রাওদাহ মসজিদের মুসল্লিদের ওপর হামলে পড়ে জঙ্গিরা। এ সময় তারা গুলিবর্ষণ ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
স্থানীয়রা জানান, মসজিদটিতে সাধারণত সুফিবাদে বিশ্বাসীরা নামাজ আদায় করেন। জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস সুফিবাদকে ইসলামবিরোধী মনে করে।
২০১৩ সালে সেনা অভ্যুত্থানে মিসরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই দেশটিতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে।